বগুড়ায় খুরা রোগে ৮ গরুর মৃত্য; আক্রান্ত ৩ শতাধিক

প্রতীক ওমর, বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ায় গরুর খুরা রোগ মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ রোগে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বড়ছে। গত ১ সপ্তাহে এ রোগে ৮ গরুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ৩শতাধিক গরু-বাছুর।

জেলার শাজাহানপুর, সারিয়াকান্দি, দুপচাঁচিয়া, শেরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা জানাগেছে, প্রায় বাড়িতেই দুএকটি গরু আক্রন্ত হয়েছে। বিশেষ করে বন্যা দুর্গত এবং ডোবা, বিল এলাকর পশু তুলনা মূলক বেশি। খাল বিলের পানি নেমে যাওয়ায় নরম কাদা মাটিতে গরুর পদাচারণার ফলে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ছোঁয়াছে রোগ হওয়ায় এটি খুব দ্রত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকার বসত বাড়ির গরু-বাছুরের শরীরে। একের পর এক গরু-বাছুর অসুস্থ হতে থাকে।

শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা উত্তরপাড়ার মাহফুজার রহমান পুটু’র পুত্র আব্দুল মজিদের ১টি বকনা গরু একই এলাকার আব্দুর রহমানের পুত্র আলমের প্রায় ৬০ হাজার টাকা মূল্যের গাভী, সামস উদ্দিনের ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড় গরু মারা যায়। এছাড়া এনামূল হকের ২০ হাজার টাকা মূল্যের বকনা গরু, ভোলা মিয়ার ১টি বাছুর গরু, সিরাজুল ইসলামের ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড় গরু, মহিবর রহমানের ৪২ হাজার টাকা মূল্যের গাভী জহুরুল ইসলামের ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের ষাড় গরু মারা গেছে। জেলায় এই রোগে আক্রন্ত হয়েছে প্রায় হাজার তিনেক গবাদি পশু । আক্রান্ত পশুদের মধ্যে অনেক গুলোর অবস্থা আশংকাজনক।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, স্থানীয় পল্লী প্রাণি চিকিৎসকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুরা রোগের ভ্যাক্সিন দিয়ে গরু প্রতি ২শ’ টাকা করে নিয়েছেন। তারপরও গরু-বাছুর খুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পশুর শরীরে কাঁপতে কাঁপতে জ্বর আসে। মুখ দিয়ে লালা ঝড়ছে এবং পায়ের খুরের ফাঁকে ঘা হয়েছে। তাদের ধারণা পল্লী প্রাণি চিকিৎসকরা নিম্নমানের অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যক্সিন দিয়ে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছে।

স্থানীয় খোট্টাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী খন্দকারঅভিযোগ করেছেন, খুরা রোগে গরু মারা যাচ্ছে এমন সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাকে সরেজমিন গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেছি। কিন্তু তেমন সাড়া পায়নি। প্রাণি সম্পদ দপ্তর দ্রত ব্যবস্থা নিলে কৃষক পরিবার গুলোর এতো ক্ষতি হতো না।

অপরদিকে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.নার্গিস খানম জানিয়েছেন, ভাইরাসের আক্রমণে খুরা রোগ হয়। এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই। তবে রোগ হওয়ার পূর্বে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করলে রোগ প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু সঠিক সময়ে স্থানীয়রা সরকারি হাসপাতালে গবাদি পশুর চিকিৎসা নিতে আসেনি। কিংবা সংবাদও দেয়নি। দেরিতে সংবাদ পাওয়ার পরও খুরা রোগের মহামারি নিয়ন্ত্রণে সাধ্যমতো চেষ্টা করা হচ্ছে।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: শফিউজ্জান বলেন, গবাদি পশুর খুরা রোগে সংবাদ শোনার পর পরেই আক্রান্ত পশুর চিকিৎসাসহ কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: