কবুতর পালন করে মাসে ২৫ হাজার টাকা আয় (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রথমে গ্রামের বসতবাড়িতে শখ করে দেশি প্রজাতির কবুতর পোষা। তারপর ডিম থেকে ছানা ফুটিয়ে কবুতরের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি। হাটে নিয়ে বিক্রি এবং আয় হতে থাকা। অবশেষে কবুতর পালনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ। এই খাত থেকে এখন মাসিক আয় অন্তত ২৫ হাজার টাকা।

এসএসসি পাসের পর নানা সংকটে তারেককে পড়াশোনায় ইস্তফা দিতে হয়। অল্প পড়ালেখার কারণে চাকরির চেষ্টা করেননি। বড় ব্যবসা করার পুঁজি ছিল না তাঁর। আয়-রোজগারের চিন্তা করতে গিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কবুতর নিয়ে ভাবনার নেশাকে পেশায় পরিণত করেন তারেক। দেড় লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন কবুতরের বাণিজ্য। উপজেলা সদরে দোকান ভাড়া নিয়ে কবুতরের দোকান গড়ে তোলেন। এখন দেশি কবুতরের পাশাপাশি বিদেশি নামি-দামি কবুতরে সাজানো তাঁর দোকান। দুই হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা জোড়া দামের কবুতর পাওয়া যায় তাঁর দোকানে।

শখে যাঁরা কবুতর পোষেণ, তাঁদের নামি-দামি কবুতরের জন্য তারেকের কাছে আসতে হয়। উপজেলা শহরে কবুতরের এমন ব্যতিক্রমী দোকান গড়ে ওঠার কারণে এলাকার অনেকেই এখন নামি-দামি কবুতর শখ করে পালনের দিকে ঝুঁকছেন। আর তারেক কবুতরের ব্যবসায় প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করছেন। শখে কবুতর পোষেণ এমন লোকজনই তাঁর কবুতরের দোকানের প্রধান ক্রেতা। নামি-দামি কবুতরের পাশাপাশি দেশি প্রজাতির কবুতরও বিক্রয় করেন তিনি।

মঠবাড়িয়া শহরের তুষখালী সড়কের আহম্মেদ মার্কেটে তারেকের দোকানে দেশি কবুতরের পাশাপাশি বিদেশি নামি-দামি অন্তত ১০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ময়ূরপঙ্খী, র‌্যাং, গিরিবাজ, সিরাজি, বল, কগা, হোমার, জালালি ও কাপ্তান উল্লেখযোগ্য। এক জোড়া ময়ূরপঙ্খী পাঁচ থেকে সাত হাজার, র‌্যাং ১০ থেকে ১২ হাজার, গিরিবাজ ৫০০ থেকে ৭০০, সিরাজি চার হাজার, বল ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার, কগা এক থেকে দেড় হাজার, হোমার দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার, জালালি এক হাজার থেকে দেড় হাজার ও কাপ্তান দুই-তিন হাজার টাকায় বিক্রয় হয়।

তারেক জানান, কবুতরের তেমন রোগ-ব্যাধি না থাকায় ঝুঁকি কম। কবুতর খুবই নিরীহ প্রজাতির পাখি। লালন-পালন করাও সহজ। নামি প্রজাতির কবুতর তিনি খুলনা, যশোর ও বরিশাল থেকে পাইকারি কিনে নিজের দোকানে প্রতিপালন করে বিক্রয় করেন। তাঁর ইচ্ছা উন্নত প্রজাতি ও দামি সব কবুতরের একটি খামার গড়ে তোলা।

pp54

তারেক এই প্রতিবেদকের সঙ্গে বলেন, কবুতরের ব্যবসার শুরুতে অনেক ঝুঁকি মনে করেছিলাম; কিন্তু এখন তা মনে হচ্ছে না। যেকোন যুবক এ ব্যবসা করে বেকারত্ব দূর করতে পারেন। তবে ব্যবসায় অন্তত দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পুঁজির প্রয়োজন পড়বে। সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালনে ঋণসহায়তা পেলে যেকোনো বেকার যুবক এ লাভজনক ব্যবসা করতে পারেন।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কবির আহম্মেদ বলেন, যুবক তারেক কবুতরের দোকান করে তাঁর বেকারত্ব দূর করেছেন। এটি আয়বর্ধক প্রকল্প হিসেবে যেকোনো বেকার যুবকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে ঋণ দেওয়া হয়। তবে কবুতর পালনের জন্য কোনো ঋণ নেই। তবে বেকার যুবকদের কবুতর পালন প্রকল্পে ঋণ পেতে হলে প্রশিক্ষণের আওতায় আসতে হবে।

দেশের সবচেয়ে বড় কবুতরের হাট এর প্রতিবেদন দেখুন ভিডিওতে….

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: