প্রাণির ভ্রূণ সংরক্ষণে বাকৃবির অভূতপূর্ব সাফল্য

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের গবেষকরা গবাদি পশুর ভ্রূণ সংরক্ষণে সফলতা অর্জন করেছেন। তারা বলছেন, গরুর ভ্রূণ সংরক্ষণ করে এখন বছরে ৮ থেকে ১০টি বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

গবেষকরা জানান, তারা ভ্রূণ উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং প্রতিস্থাপনে পুরোপুরি সফল হয়েছেন। বাংলাদেশে এ সাফল্য এই প্রথম।

সূত্র আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবৎ কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থার প্রচলন থাকলেও বহুমাত্রিক কারণে পশু গর্ভধারণের হার এখন পর্যন্ত আশানুরূপ নয়। তাই স্বল্পতম সময়ে উচ্চগুণ সম্পন্ন অধিক সংখ্যক পশুর বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেন্সমেন্ট (হেকেপ) প্রজেক্টের মাধ্যমে সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগ কাজ শুরু করে।

ময়মনসিংহের বিভিন্ন বাণিজ্যিক খামারেও এ গবেষণা চলছে। ফলাফল হিসেবে এরই মধ্যে গরুর ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ থেকে শিগগিরই সুস্থ এবং মানসম্মত বাছুর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ভেড়ার ভ্রূণ নিয়েও গবেষণা চালিয়ে সাফলতা এসেছে। যেমন সম্প্রতি ৬টি ভেড়ায় ১২টি হিমায়িত ভ্রূণ স্থাপন করা হয়েছে, যা থেকে চলতি মাসেই বাচ্চা প্রসব হবে।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. নাছরিন সুলতানা জুয়েনা জানান, সাধারণ নিয়মে প্রতিটি সুস্থ গাভী এবং ভেড়া বছরে একটি মাত্র বাচ্চা প্রসব করতে পারে। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় উন্নতজাতের গাভী এবং ভেড়া থেকে সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে বছরে ২৫ থেকে ৩০টি ভ্রূণ উৎপাদন করা সম্ভব।

তিনি জানান, প্রকল্পের অর্থায়নে রিসার্চ অ্যানিমেল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে উন্নত জাতের গাভী, ষাঁড়, ভেড়ার সিমেন সংগ্রহ করে গবেষণা করা হচ্ছে। ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের ফলে গরু অথবা ভেড়ার বাচ্চা উৎপাদন এবং এর দুধ, মাংস ও চামড়ায় বিপ্লব ঘটবে। এতে আর্থিকভাবে কয়েকগুণ লাভবান হবেন চাষি বা পালনকারীরা।

প্রকল্পের সহকারী পরিচালক ড. ফারদা ইয়াসমিন বারী বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ভ্রূণ সংরক্ষণ হচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রয়োজনমতো ভ্রূণ সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করে গবাদি পশুর মানসম্মত কৃত্রিম প্রজনন নিশ্চিত করতে পারবেন। এ লক্ষ্যে স্থায়ী সিমেন ও ভ্রূণ ব্যাংকও তৈরি করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: