বিসিবির গঠনতন্ত্র আংশিক পরিবর্তন এনে অনুমোদন

স্পোর্টস ডেস্ক:
২০১২ সালের গঠনতন্ত্রে আংশিক পরিবর্তন এনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অতিরিক্ত সাধারণ সভায় (ইজিএম) গঠনতন্ত্র অনুমোদন হয়েছে। পূর্বের গঠনতন্ত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) ‘কোটা’য় থাকতে পারতো তিনজন। তবে এখন থেকে সংখ্যাটা হবে দুজন। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই পরিবর্তন এনে গত নির্বাচনের গঠনতন্ত্রের বৈধতা দিয়েছে বিসিবি।

১৩৩ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে অনুমোদিত হয়েছে গঠনতন্ত্রটি। দুই-একদিনের মধ্যে এনএসসি’র কাছে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এনএসসি অনুমোদন দিলে বিসিবি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে পারবে। তবে তার আগে অবশ্যই আদালতের রায় বিসিবির পক্ষে আসতে হবে।

ইজিএম শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘২০১৭ সালের গঠনতন্ত্রে আমরা খুব বেশি পরিবর্তন করিনি। শুধু আইসিসির গাইডলাইন মেনে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করেছি। শুধু একটা বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। আদালত এনএসসির কর্তৃত্ব কমানোর আদেশ দিয়েছে। বিসিবির গঠনতন্ত্রে এনএসসির কোটা ছিল তিনটি। এখন তা কমিয়ে দুটো করেছি আমরা। ভবিষ্যতে এনএসসির কোটা না-ও থাকতে পারে। তবে এমনিতে এনএসসির সঙ্গে আমাদের কোনও বিরোধ নেই। এমন কোনও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়নি যে কারণে এনএসসির সঙ্গে আমাদের কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয়।’

গঠনতন্ত্রে আরও সংশোধন না করা প্রসঙ্গে বোর্ড সভাপতির ব্যাখ্যা, ‘বেশি পরিবর্তন করিনি, কারণ কেউ হয়তো একটা গ্যাপ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতো। পরিবর্তন বেশি করলে কেউ বলতে পারতো, আগেরটা অনুমোদন না নিয়ে নতুন গঠনতন্ত্র কেন তৈরি করেছি আমরা! এ কারণে প্রায় আগের গঠনতন্ত্রই বহাল রেখেছি।’

সোমবার বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) এবং অতিরিক্ত সাধারণ সভা (ইজিএম) হলেও এখনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারছে না বিসিবি। এ প্রসঙ্গে নাজমুল হাসানের বক্তব্য, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা সংশোধনী এনএসসিতে পাঠাবো। এনএসসি থেকে অনুমোদন হওয়ার পর আমরা বোর্ড মিটিং ডাকবো। আর সেই বোর্ড মিটিংয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।’

আগামী ১৩ অক্টোবর শেষ হবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র ১১ দিন বাকি। এত অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা যে সম্ভব নয়, তা জানা কথা। কিন্তু ১৩ অক্টোবরের পর বর্তমান কমিটি কী করবে, গঠনতন্ত্রে তেমন কোনও গাইডলাইন নেই বলে জানালেন বোর্ড প্রধান।

তাহলে কি নতুন কোনও কমিটি দায়িত্ব নেবে? নাকি বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হবে? এমন প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি বল পাঠিয়ে দিলেন এনএসসির কোর্টে, ‘আমরা চালিয়ে যাবো, নাকি মেয়াদ বাড়বে, নাকি অ্যাডহক কমিটি গঠন হবে- আমাদের গঠনতন্ত্রে এমন কোনও গাইডলাইন নেই। আমাদের এনএসসি সাহায্য করতে পারবে। গঠনতন্ত্রে শুধু আছে, নির্বাচনের পরে ১৫ কার্যদিবসের পর ১৬ নম্বর কার্যদিবসে নতুন নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে এই কমিটি। আমরা যদি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেই, তাহলে যারা জিতে আসবে তাদের এ সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করবো।’

এনএসসির ক্ষমতা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে নাজমুল হাসানের মন্তব্য, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আছে, এনএসসি গঠনতন্ত্র অনুমোদন অথবা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। কিন্তু তারা গঠনতন্ত্রে কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না। তবে তাদের কাছ থেকে অবশ্যই অনুমোদন নিতে হবে। যে কোনও গঠনতন্ত্রেই আমরা নির্বাচন করি না কেন, সেটা আইসিসির গাইডলাইন এবং এনএসসির অনুমোদন নিয়ে করতে হবে। আমরা এখন এনএসসির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি, যা নিয়ে নির্বাচন করবো।’

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের গঠনতন্ত্র মেনে ২০১৩ সালে নির্বাচন করতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু তাতে বাধ সেধেছিল আইসিসি। এ কারণে ২০১২ সালের ১ মার্চ গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনেছিল বিসিবি। সেটি অনুমোদন না করে কয়েকটি সংশোধনী এনে ওই বছরের নভেম্বরে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি করে এনএসসি। কিন্তু ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি এনএসসির সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ ঘোষিত হয়। তবু ক্রিকেটের স্বার্থে এনএসসির সংশোধিত গঠনতন্ত্রেই নির্বাচনের অনুমতি পায় বিসিবি।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: