জাবি ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জাবি প্রতিনিধি:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় দুুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত তিন ঢাবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অন্য এক ছাত্র জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে মামলা করেনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মঙ্গলবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসীন-উল কাদির বলেন, “জালিয়াতির অভিযোগে ওয়ালি হোসেন জনি ও খলিলুর রহমান আনোয়ারের বিরুদ্ধে ১৯৮০ সালের ‘পাবলিক পরীক্ষা আইন (অপরাধ)’-এর ৩ (খ/১৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলা নং- ৫(১১)১৫।”
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ওয়ালি হোসেন জনি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান আনোয়ার।
এর আগে সোমবার ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের পরীক্ষা চলাকালে প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ওয়ালিউর হোসেন জনি। এ সময় জনিকে উদ্ধার করতে গিয়ে আটক হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান আনোয়ার। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদের মধ্যে আনোয়ার শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারী এবং ওয়ালী নিজেকে জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগকর্মী বলে দাবি করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আনোয়ার বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্সের অধ্যয়নরত।
আটকের পর ওয়ালি বলেছিলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহফুজুর রহমান ইমন ও জাবি ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে ছানাউল হোসেনের পরিবর্তে আমি পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম।” “তারা আমাকে বলেছিল, কোনো সমস্যা হবে না। সমস্যা হলে বিষয়টি তারা দেখবে।”
মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জালিয়াতির সংবাদ প্রকাশিত হলে ঢাবি প্রশাসন অভিযুক্ত আনোয়ার, ইমন ও ওয়ালিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী।

এদিকে জালিয়াতির ঘটনায় ওয়ালি ও আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করলেও জালিয়াতির সাথে জড়িত অপর ঢাবি শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান ইমনের বিরুদ্ধে মামলা করেনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
‘অভিযুক্ত অপরজনের বিরুদ্ধে কেন মামলা করেননি?’- এমন প্রশ্ন করলে জাবি প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “এ বিষয়ে আমিতো তোমাকে কইফিয়ত দেব না। আমার অফিসে আসো, তোমার সাথে সরাসরি কথা বলবো”- বলে ফোন কেটে দেন।

জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত থাকায় আনোয়ারকে সোমবার রাতেই সংগঠন থেকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3