যে পাঁচ কারণে ঐশীর সাজা কমেছে
নিউজ ডেস্কঃ
মা স্বপ্না রহমান ও পুলিশ কর্মকর্তা বাবা মাহফুজুর রহমানের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের সাজা কমিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
২২ অক্টোবর রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে ঐশীর সাজা কমানোর ক্ষেত্রে পাঁচটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে গত ৫ জুন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। হাই কোর্টের ওই রায় ঘোষণার সময় বলা হয় পাঁচটি যুক্তি বিবেচনায় নিয়ে ঐশীর সাজা কমানো হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, ঐশী অস্বস্তিবোধ করছিল। তদন্তের সময় যখন তাকে কোনো এক ব্যক্তি খারাপ উদ্দেশ্যে কিছু একটা বলেছিল, সে কারণে ঐশী আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।
এছাড়া তদন্তে উঠে এসেছে, ঐশী যে নিজ হাতে তার মা-বাবাকে হত্যা করেছে সে ভয়ঙ্কর রাতের কথা সে তখনও চিন্তা করতে পারছিল না। এমন পরিস্থিতিতে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো কি ন্যায়সঙ্গত হবে?
এতে বলা হয়, ঐশীর অপরাধ ফৌজদারি আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য হলেও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়াই যুক্তিযুক্ত মনে করছে হাই কোর্ট।
এর পাঁচ কারণও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে-
এক. সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়াই এবং মানসিক বিচ্যুতির কারণেই ঐশী জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায় এবং সে অ্যাজমা, ওভারি সিস্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
দুই. ঐশী দাদি এবং মামাও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
তিন. ঘটনার সময় তার বয়স ১৯ বছরের কাছাকাছি, তখন সে সাবালকত্ব পেয়েছে মাত্র।
চার. ঐশীর বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই।
পাঁচ. ঘটনার দুই দিন পরই ঐশী স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করে।
এছাড়া রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নয়। এটি কার্যকর করলেই যে সমাজ থেকে অপরাধ দূর হয়ে যাবে, তেমনটি নয়। বরং কম সাজাও অনেক সময় সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে সুস্পষ্টভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।