জনপ্রিয় ক্রাইম সিরিয়ালের উপস্থাপক নিজেই খুনি!

নিউজ ডেস্ক:

‘ক্রাইম শো’র উপস্থাপক নিজেই খুনি!’ পাঠক, শিরোনাম পড়েই চমকে উঠলেন। তবে ঘটনার বাঁকে বাঁকে যে রহস্য রয়েছে, তা আপনাকে আরও বেশি চমকে দিতে পারে! একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব ভয়াবহ অপরাধের সত্য ঘটনা নিয়ে নির্মিত খুব জনপ্রিয় ‘ইন্ডিয়াজ মোস্ট ওয়ান্টেড’ ক্রাইম সিরিয়ালের উপস্থাপক ছিলেন সুহাইব ইলিয়াসি। এখানে মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করে দিতেন তিনি তার একেকটি শোতে।

সময়ের পরিক্রমায় এখন নিজেই পুলিশের খাঁচায় বন্দি এ উপস্থাপক। অপরাধ রীতিমতো খুনের। তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে। এরপর আদালতে বিষয়টি চলে যায়। যদিও প্রথমদিকে বিষয়টি দাঁড়িয়েছিল, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। এরপর চলে মামলার শুনানি। কিন্তু শেষদিকে ঘটনা মোড় নেয়। আগামী ২০ ডিসেম্বর ওই মামলার সাজা শোনাবে আদালত।

ভারতীয় পত্রিকাগুলো রবিবার জানায়, ঘটনার শুরু ২০০০ সালের ১০ জানুয়ারি। পূর্ব দিল্লির বাসা থেকে সুয়াইবের স্ত্রী আঞ্জু ইলিয়াসিকে মারাত্মক জখমসহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশকে সুহাইব জানায়, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের সূত্রে তার স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এসময় আঞ্জু চাকু দিয়ে নিজের শরীরে একাধিক আঘাত হানে বলে জানান সুহাইব।

তারপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঞ্জু মারা যান। দুইবার করানো ময়না তদন্ত, বিশেষ ফরেনসিক তদন্ত আর আঞ্জুর বাবা-মার বয়ানে সুহাইবের দাবি সঠিক বলে প্রতীয়মান হচ্ছিল। এ সূত্রে পুলিশও আত্মহত্যা তত্ত্বের ভিত্তিতে মামলা শেষ করার দিকে এগোচ্ছিল।

কিন্তু সত্যের ঘটনা সামনে এসেছে গত ফেব্রুয়ারিতে। কানাডা থেকে দেশে ফিরেন আঞ্জুর বড় বোন রশ্মি। পেশায় শিক্ষক রশ্মি জানান, মৃত্যুর আগে দিয়ে তার সঙ্গে কথা হয় ছোট বোনের। তখন সুহাইবের অপকর্মের বিষয়ে বলেছিলেন আঞ্জু। রশ্মির কথায় পাল্টে যায় মামলার চিত্র। তিনি তার বয়ানের সমর্থনে পুলিশের কাছে আঞ্জুর লেখা একটি ডায়েরিও দেন।

তাতে অনেক ঘটনার বর্ণনা আছে। পুলিশ ও আঞ্জুর বাবা-মা পুরনো ঘটনার জাবর কেটে বুঝতে পারেন, আসলে আঞ্জুকে হত্যা করা হয়েছিল। নতুন করে তদন্তের সূত্রে পুলিশ চলতি বছরের ২৮ মার্চ সহাইব ইলিয়াসিকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, প্রতারণা ও যৌতুকের দাবিতে হত্যা এবং অপরাধের আলামত মেটানোর অপরাধে।

পূর্ব দিল্লি পুলিশের তৎকালীন এসিপি (অপরেশন্স) রাজিব রঞ্জন জানান, ট্রায়াল কোর্ট সুহাইব ইলিয়াসির ওপর থেকে হত্যার অভিযোগ তুলে নিয়েছিল। তবে আমরা তার বিরুদ্ধে সপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাই এবং হত্যার অভিযোগ ফের যোগ করা হয়।

এদিকে বাদীর আইনজীবী সত্যেন্দ্র শর্মা জানান, আঞ্জুর হত্যাকে আত্মহত্যা প্রমাণে সুহাইব লাগাতার চেষ্টা করেছেন। এজন্য নিজের বয়ানে একের পর এক বদল এনেছেন আর এতেই একপর্যায়ে সে ফেঁসে যায়।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3