খাসোগি হত্যার দায় ঘনিষ্ঠ অনুচরদের ওপর চাপালেন সালমান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
টানা আঠারো দিন ধরে সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করার পর সৌদি আরব ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটের ভিতরেই তাকে হত্যার কথা শনিবার স্বীকার করেছে।

রিয়াদ যে রাজপরিবারের সমালোচক সাংবাদিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে তাই নয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহযোগীকেও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আহমেদ আল-আসিরি এবং সৌদ আল-কাহতানি। এরা দু’জনই যুবরাজ সালমানের ত্বরিত উত্থানের সময় আলোচনায় আসেন। খাসোগির মৃত্যুতে বরখাস্ত পাঁচজনের মধ্যে এরাই সবচেয়ে উচ্চপদস্থ।

এই ঘটনায় আরও ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।

আসিরি একজন দুই তারকাভূষিত সাবেক জেনারেল। ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধের প্রধান কারিগর মনে করা হয় তাকে। কাহতানি যুবরাজ সালমানের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান। তিনি সৌদি যুবরাজের বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের একজন উচ্চকণ্ঠও সমর্থকও বটে। টুইটারে কাহতানির সাড়ে তের লক্ষ ফলোয়ার রয়েছে।

গভীর রাতে রিয়াদ থেকে দেয়া অত্যন্ত সমন্বিত একাধিক বিবৃতিতে সৌদি আরব দাবী করে খাসোগির মৃত্যু ছিল একটা দুর্ঘটনা। আটক অভিযুক্তদের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে খাসোগি নিহত হন। এরপর ঘাতকরা এই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।

বরখাস্ত ও আটকদের পরিণতি কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সৌদি আরবের ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা গুপ্তচর সংস্থাগুলোই এই ঘটনার দায় নিজের ঘাড়ে নিবে তা স্পষ্ট।

আসিরি ও কাহতানি ছাড়াও বরখাস্ত উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তা হলেন, জেনারেল ইন্টেলিজেন্সের সহকারী প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বিন সালেহ আল-রামিহ; জেনারেল ইন্টেলিজেন্সের সহকারী প্রধান মেজর জেনারেল আব্দুল্লাহ বিন খলিফা আল-শায়ি; এবং জেনারেল ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন-এর ডিরেক্টর ডিরেক্টর মেজর জেনারেল রাশাদ বিন হামাদ আল-মোহাম্মদি।

গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি তার আগের তালাকের কাগজপত্র আনতে যান। এ সময় কনস্যুলেটের বাইরে তার বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিজের কাছে তিনি তার ফোনটি রেখে যান। তিনি ফিরে না এলে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টাকে ফোন করার নির্দেশও হাতিসকে দিয়ে যান খাসোগি। ওই দিন মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর হাতিস তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন।

খাসোগি সৌদি যুবরাজ তথা রাজপরিবারের সমালোচনা করায় সৌদি পত্রিকায় তার কলাম বন্ধ করে সতর্ক করে দেয়া হয়। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালেখি করছিলেন।

খাসোগির পরিচিত একজন গণমাধ্যমকে জানান, তাকে প্রলোভন দেখিয়ে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও চেষ্টা করেছিল সৌদি সরকার।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: