বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে গতকাল শুক্রবার রাতে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগ। এতে ওই শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে যায় ও বাম হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবিতে আজ শনিবার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেন ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। মারধরকারীরা হলেন, আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবীর নাহিদ। তারা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

হল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবীর নাহিদের নেতৃতে বেশ কয়েজন সোহরাবকে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নাম্বার কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন আসিফ লাক ও হুমায়ন কবির নাহিদ। একপর্যায়ে তারা দুইজন মিলে সোহরাবকে রড দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে। সোহরাব রক্তাক্ত হলে তারা মারধর বন্ধ করেন। পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রামেকে ভর্তি করেন।

সোহরাবের বন্ধু তনয় জানান, সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। চিকিৎসক জানিয়েছে মাথার তিন জায়গায় মোট ১৫ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার পায়েও গুরুতর যখম হয়েছে। এক্সরে করা হচ্ছে রিপোর্ট পেলে জানা যাবে পা ভেঙ্গেছে কিনা।

এদিকে, আজ সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তারা তিনটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে নাহিদ ও আসিফসহ যারা হত্যা চেষ্টায় জড়িত ছিল তাদের গ্রেপ্তার ও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার, হল প্রশাসন নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সোহরাবের চিকিৎসা ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেওয়া।

বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। সেখানে ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, আজ রাতের মধ্যেই দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। তাদের ছাত্রত্ব বাতিলের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। সোহরাবের ব্যয়ভার প্রশাসন বহন করবে বলেও জানান এই শিক্ষক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। দোষ প্রমাণ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। তবে ঘটনাটি জানার পর আমি সহকারী প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। সোহরাবের বন্ধু জুবায়েরের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সে সোহরাবের সাথেই আছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3