কৃষকের মুখের হাসি ফিরিয়ে দিল বিএডিসি
মির্জা কিরণ, ঠাকুরগাঁও:
গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ এই ছিল এক সময়ের বাংলার কৃষক। প্রবাদ বাক্যের সেই গোলা ভরা ধান অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতই ছিল ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর ও রাণীশংকৈল উপজেলার হাজার হাজার কৃষকের কাছে। এই দুই উপজেলার হাজার হাজার একর জমি বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধ থাকত। শুধু বোরো ধান ছিল কৃষকদের একমাত্র ভরশা। কখনো পানির কারনে সে ফসলও ঘরে তোলা কষ্টকর ছিল এ অঞ্চলের কৃষকদের।
কৃষকের এই কষ্ট লাঘব করতে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে হরিপুর ও রাণীশংকৈল উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান লোলতাই খালটির পুনঃখনন কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় দেড় কেটি টাকা ব্যায়ে ১৩.৪৫ কি. মি. দীর্ঘ এ খালটি খনন করবে সাতটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
বিএডিসি’র এই উদ্দ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এলাকাবাসী জানান, আগামী মৌসুম থেকে তাদের এক ফসলি জমিগুলো তিন ফসলিতে পরিণত হবে। ফলে উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
এ সম্বন্ধে প্রকল্পটির পরিচালক প্রকৌশলী এস এম শহীদুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, বিএডিসি বগুড়া সার্কেল বলেন, কৃষির উন্নয়নে কৃষকের স্বার্থে বিএডিসি’র চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা এ খালটির খনন কাজ শুরু করেছি। খাল খননের ফলে একদিকে যেমন জলাবদ্ধতা নিরসন হবে পাশাপাশি শুকনো মৌসুমে খালের পানি চাষকার্যে ব্যবহারের ফলে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া খালের পানিতে মাছ চাষ, হাঁস পালন এবং খালের পাড়ে সব্জি চাষ করে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকগণ আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারবেন বলে মনে করেন প্রকল্প পরিচালক।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এ খালটির কোন ধরনের সংস্কার কাজ না করায় তা ভরাট হয়ে যায়। ফলে পানি প্রবাহের নির্দিষ্ট কোন পথ না থাকায় পাশ্ববর্তী কৃষি জমিতে পানি জমে যেত। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হত হাজার হাজার কৃষক। ইতঃপূর্বে কয়েকবার খালটি খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয় নি। অবশেষে কৃষকদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে খনন কাজ শুরু করে বিএডিসি।