রাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে ৯ জনের কারাদণ্ড

রাবি প্রতিনিধি:
রাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে ৯ জনকে কারাদণ্ডরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় দিনে জালিয়াতির দায়ে ৯ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ‘এফ’ ও ‘এইচ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন একাডেমিক ভবন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রক্টর অফিসে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট নীলুফা ইয়াসমিন পাবলিক পরীক্ষা আইন (অপরাধ) ১৯৮০ সালের ১১(গ) ধারা অনুযায়ী প্রত্যেকে বিভিন্ন মেয়াদে তাদের কারাদন্ডে দণ্ডিত করেন। এ ছাড়াও পরীক্ষায় অসাদুপায়ের জন্য ৪ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, চাপাই নবাবগঞ্জের জেলার রামজীবনপুর গ্রামের ছাদেকুল ইসলামের ছেলে মো.জিকেমালি, একই জেলার আনসার আলীর ছেলে ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(রুয়েট) মেকানিক্যাল বিভাগের ২য় সেমিস্টারের ছাত্র আনাস মোহাম্মদ মারুফ, রুয়েটের ছাত্র ও পাবনা জেলার বিষ্ণু চক্রবর্তীর ছেলে তুষার চক্রবর্তী, একই জেলার ফয়জুর রহমানের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান, রাজশাহীর বাঘা জেলার ইমরান আলীর ছেলে মশিউর রহমান, ঝিনাইদহ জেলার যাত্রাপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে ও রাবি আরবী বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জামসেদুল ইসলাম, রাজশাহীর পবার জালাল উদ্দিনের ছেলে ও রাবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, চাপাই নবাবগঞ্জের জেলার মনজুর হোসেনের ছেলে ও রাজশাহী কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান,কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের একেএম নাজমুস শাহাদতের ছেলে হাসানুল বারী।

প্রক্টর অফিস সুত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল ৯ থেকে ১০টার ‘এফ’ ইউনিটর পরীক্ষায় জিকেমালি ও জামসেদুল ইসলাম রবীন্দ্রকলা ভবনের ৪২৪ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তারা পরীক্ষা চলার কিছু সময় পর নিজেদের ওএমআর সিট পরিবর্তন করে। বিষয়টি দায়িত্বরত শিক্ষক দেখলে তাদেরকে আটক করে প্রক্টর অফিসের প্রেরণ করে। পরে তারা জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে। তারা মূলত ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসেছিলো।

পরে বিকালে ‘এইচ’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে, আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আনাস মোহাম্মদ মারুফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলা ভবনের ৪০৭ নম্বর কক্ষ থেকে জালিয়াতির দায়ে আটক করা হয়েছে। একই দায়ে তুষার চক্রবতী, মশিউর রহমান, আশিকুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন কলা ভবন থেকে আটক করা হয়েছে।
তাছাড়া হাসানুল বারীকে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইজ দিয়ে এসএমএস উত্তরপত্র আদান-প্রদানের দায়ে ৪র্থ বিজ্ঞান ভবন থেকে আটক করা হয়। এই জালিয়াতির প্রমানিত হওয়ায় তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।

এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার সময় অসাদুপায়ের জন্য রাজশাহী ডেন্টাল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমান, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নওশাদ আলীকে বহিস্কার করেছেন বিশ্ববিদালয়ের প্রক্টর অফিস। তারা উভয়ই রবীন্দ্র কলা ভবনের ৪২৪(বি) কক্ষে পরিক্ষা দিচ্ছিলেন।

একই অপরাধে রাজশাহীর মতিহার থানা হরিয়ানের বাসিন্দা হাসান মিয়ার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকি ও মতিহারের শ্যামপুরের মাহফুজুর রহমানের ছেলে শাহরিয়ার পাভেজকে বহিস্কার করা হয়েছে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের ৩২৪ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড.তারিকুল হাসান বলেন, সাজা প্রাপ্তদের অপরাধ পাবলিক পরীক্ষার আইনে পরায় তাদেরকে ভ্রামমানণ আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়। ভ্রামমান আদালত তাদের প্রত্যেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষায় যারাই জালিয়াতি করবে তাদেরকে আটক করা হবে। ভর্তি পরীক্ষা ডিজিটালাইজডের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার ফলে জালিয়াতিরা পার পাবে না বলেও জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: