নিয়োগ উস্কে দিচ্ছে বাকৃবির অফিসার-কর্মচারীদের আন্দোলন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর হঠাৎ করেই কর্মচারী ও অফিসারদের চতুর্মুখী আন্দোনে স্থবির হয়ে পড়ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। গত দুইদিন ধরে প্রশাসন ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ চারটি কার্যালয়ে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদ।
সোমবারও প্রশাসন ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখে অফিসার্স ফোরাম। এদিকে প্রশাসনের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার, কর্মচারিরা বাড়তি সুবিধা নিতে বিভিন্ন অযৌক্তিক ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে বিভিন্ন পদে ১৬৩ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রশাসন। বিভিন্ন জটিলতার কারণে ওই নিয়োগের দীর্ঘ সূত্রতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো রফিকুল হককে অপসারণ করা হলে নিয়োগ আটকে যায়।
বর্তমান উপাচার্য গত ২০ আগস্ট ১২৩ জন কর্মচারী নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আগের উপাচার্যের সময় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির এডহক মাস্টারোলে কর্মরতদের চাকুরী স্থায়ীকরণসহ নয় দফা দাবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য়, ৪র্থ ও কারীগরি কর্মচারীদের সংগঠনগুলো কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নামে। এসময় তারা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে প্রশাসন ভবনের পাশে লাগাতার সমাবেশ করে। দাবী পর্যালোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় একটি কমিটি গঠন করে দিলে তারা সাময়িকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়ে আগামী রবিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সময় বেঁধে দেয়।
এদিকে জাতীয় বেতন কাঠামো’২০১৫ বাস্তবায়নের দাবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদ গত ৫ মাসে দুই একবার কর্মবিরতি পালন করলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর হঠাৎ করেই আন্দোলনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ইদুল আযাহার ছুটির পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করে দেওয়া বেতন পর্যালোচনা কমিটির রিপোর্ট দ্রুত প্রদানে দাবীতে এবং তা বাস্তবায়নের দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। রবিবার ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দিলেও তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার না করে লাগাতার কর্মসূচী পালন করে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
গত দুই দিনে প্রশাসন ভবন, কোষাধ্যক্ষ, প্রকৌশল অফিস ও লাইব্রেরির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে অফিসার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রশাসনের সাথে সমযোতা হওয়ায় আগামী সিন্ডিকেট সভা পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে আন্দোলন করছে অফিসার, কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের কোন নৈতিক ভিত্তি নেই। তাদের বেতন কাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিন্যান্স নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর বাহিরে কাউকে কোন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার উপায় নেই।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বলেন, নিয়োগকে কেন্দ্র করে বাড়তি সুবিধা নিতে আন্দোলন করছে কিনা তা আমার জানা নাই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিন্যান্স অনুযায়ী অফিসাররা যতটুকু সযোগ-সুবিধা পায় ততটুকু সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে দেওয়া হবে।
সূত্র: দৈনিক জনকন্ঠ