সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করল ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের প্রতিনিধিরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবিতে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবারও স্মারকলিপি প্রদান করেছে কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিরা।

তাদের দাবি কলেজটিতে ছয়টি ব্যাচে ৩৬০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে তাদের আবাসন, চিকিৎসা, ইন্টানীভাতা, নিরাপত্তাসহ বহুবিদ সমস্যায় জজরিত এমনকি কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবদি পযাপ্ত স্হায়ী শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ্ হয়নি যার কারণে কলেজটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছিল।

এরই ফলশ্রুতিতে কলেজটিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি হিসাবে অন্তর্ভুক্তি করণের দাবিতে গত সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা কলেজের প্রধান ফটক, প্রশাসনিক ভবনসহ সকল রুমে তালা ঝুলিয়ে সকল দাফতরিক কাজ বন্ধসহ ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।

পরে বুধবার(২৭শে ফেব্রুয়ারী) রাতে কলেজের কিছু শিক্ষার্থী বহিরাগতদের নিমম হামলার শিকার হয় এবং মারাত্বক আহত হয়।এ জন্য শিক্ষার্থীরা হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপত্তার জন্য আলটিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে যার ফলে ক্যাম্পাসের পরিস্হিতি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে শুক্রবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও কলেজের আইন শৃঙ্খলা কমিটি জরুরি সভা করে কলেজটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।

উল্লেখ্য যে, কলেজের স্হায়ী শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন কতৃক নিয়োগ পত্র জারি হয় পরে তা মৌখিক পরীক্ষার পৃব মূহুতে আদালত কতৃক রিটের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যায় যদিও পরে আদালত কতৃক মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়াটির কোনো অগ্রগতি হয়নি ।

এদিকে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কতৃক নিয়োগ পত্র জারি হয় সেখানে কিছু পদে জনবল নিয়োগ হলেও বেশীসংখ্যক পদ এখনও শূণ্য যদিও নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজ স্থাপন প্রকল্পে কমরত কোনো জনবল নিয়োগ পায়নি ফলে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এদিকে আউট সোসের মাধ্যমে কিছু জনবল নিয়োগ হলেও তারা ৫-৬ মাস যাবত কোনো বেতন ভাতা পায় না এবং তাদের চাকুরির কোনো নিশ্চয়তাও নেই ফলে তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এদিকে কলেজের শিক্ষা কাযক্রম চালু রাখতে কিছু খন্ডকালীন ও গেষ্ট লেকচারার , প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরাধীন জেলা-উপজেলা থেকে প্রাণিসম্পদ কমকতা  দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে এবং তাদের বেতন ভাতা ও চাকুরির স্হায়ীত্বের বিষয়টি দীঘ দিন যাবত ঝুলে আছে যদিও এসব শিক্ষকমণ্ডলী তাদের নিরলস পরিশ্রম দ্বারা কলেজটিকে সঠিকভাবে পরিচালিত করে আসছে ।

শিক্ষার্থীরা আরো জানাই যে, গত একাদশ নিবাচনের আগে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী জনাব নারায়ন চন্দ্র চন্দসহ সরকারের উচ্চ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ তাদেরকে আশ্বাস দিয়েও কোনো কথা রাখেনি এবং বিষয়টি নিয়ে তারা বারবার প্রতারণার শিকার হচেছ ফলে একই আন্দোলনের পৃনরাবৃত্তি ঘটছে এতে তাদের শিক্ষা জীবন দিনে দিনে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়ছে।

পরিশেষে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ স্থাপন প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর/২০১৮ সালে সমাপ্ত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এই কলেজটিও বিগত চারটি ভেটেরিনারি কলেজের অনুরূপ একাডেমিক ও প্রশাসনিক সংকটের মধ্যে পড়েছে।

এসব সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি হিসাবে অন্তর্ভুক্তির দাবি করে আসছে এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসকসহ সরকারের উচ্চ সকল পর্যায়ে স্মারকলিপিও প্রদান করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তি থাকলে তাদের সকল সমস্যা সমাধান হবে বলে তারা মনে করেন কিন্তু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনাপত্তি পত্র প্রদান না করায় বিষয়টি ঝুলে আছে ।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3