উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, তবে কবে হবে তা নিশ্চিত নয়

নিউজ ডেস্কঃ

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, তবে কবে হবে তা নিশ্চিত নয়৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ১৫ দিন পর পরীক্ষা হবে- এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷
তবে এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিএসসি) ও জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে না৷ এই দুটি পরীক্ষাও বছরের প্রথম দিকে হওয়ার কথা ছিল৷

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কবে খুলবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি৷ তবে খুললে কী কী স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মানতে হবে তা চূড়ান্ত করে এরইমধ্যে মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে৷ এই গাইডলাইনে ৩১ দফা নির্দেশনা আছে৷ তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে, ক্লাস শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে৷ ওই ১৫ দিনে করোনা পরিস্থিতিতে ৩১ দফার গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামাজিত দূওত্ব নিশ্চিত করতে হবে৷ তারপর পাঠদান শুরু হবে৷

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ওপরই আসলে কবে এইচএসসি পরীক্ষা হবে তা নির্ভর করছে৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে না খুলে আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার কোনো পরিকল্পনা আপাতত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই বলে জানা গেছে৷ তাই এইচএসসি পরীক্ষা ঠিক কবে হবে তা জানা যাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তা ঠিক হলে৷

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জানান, ‘‘এইচএসসি পরীক্ষা হবে সেটা নিশ্চিত৷ তবে কবে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি৷ সবকিছু যখন স্বাভাবিক হবে তার ১৫ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষা হবে৷ এখন পর্যন্ত এটাই সিদ্ধান্ত৷’’

প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাচ্ছে এরকম একটি ধারণা ছড়িয়ে পড়লেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘‘আমরা বলিনি যে, স্কুলগুলো খুলে যাচ্ছে৷ স্কুলগুলো যখন খুলবে, তখন সেগুলো কীভাবে চলবে তার একটা গাইডলাইন জারি করেছি আমরা৷ স্কুল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি৷ কখন স্কুল খুলবে তা-ও বলা যাচ্ছে না৷’’

যদি অক্টোবরে স্কুল খোলে তাহলে একটি পাঠ পরিকল্পনা আছে যার ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্লাসের পরীক্ষা হবে৷ যদি নভেম্বরে খোলে, তাহলেও একটি পাঠ পরিকল্পনা আছে৷ কিন্তু এরপর হলে ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষা আর হবে না৷ পরবর্তী শ্রেণিতে অটো প্রমোশন দেয়া হবে বলে জানান তিনি৷

করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়৷ সেই ছুটি বাড়িয়ে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে৷ তাই এই মাসে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না তা নিশ্চিত৷

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে ও পরে যেসব ব্যবস্থা নিতে হবে তার মধ্যে রয়েছে নিরাপদ পাঠদান শুরুর ১৫ দিন আগে স্কুলগুলো শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য খুলে দিতে হবে৷ এরপর স্কুলগুলোতে পর্যাপ্ত ওয়াশরুম, সাবান ও পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে৷ সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রয়োজনে শিফট বাড়াতে হবে৷ আবার অল্টারনেট ডে তেও শিফট করা যেতে পারে৷ স্কুলে কোনো ধরনের জটলা করা যাবে না৷ শরীরে তাপমাত্রা মাপা ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে৷

জানা গেছে, যদি দেশের সব স্কুল এক সময়ে খুলে দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে অঞ্চল ভেদে পরিস্থিতি বিবেচনা করে খুলে দেয়া হতে পারে৷ তবে খুলে দেয়ার আগে আগে ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে হবে৷ খুলে দেয়ার পরও এই কর্মসূচি চালাতে হবে৷ গণমাধ্যমেও এ নিয়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে৷

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন খুলে দেয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে৷ টেকনিক্যাল কমিটি মনে করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি৷
প্রতিবছর গড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়৷ ১ এপ্রিল থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল৷ এই বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা উদ্বেগের মধ্যে এখন দিন পার করছেন৷

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: