মৎস্য চাষীদের লাভবান করতে হবে, বিএফআরআই কর্মশালায় বক্তারা

মো. আরিফুল ইসলাম, বাকৃবিঃ

মৎস্য চাষীদের লাভবান করতে হলে খাদ্যের দাম কমানো ও  বিদেশে মাছ ও মাছজাত পণ্য রপ্তানি করতে হবে। দেশের আমিষের ৬০ ভাগ চাহিদা পূরণকারী উৎস মৎস্য খাতের উন্নয়নে এবং মৎস্য চাষীদের লাভবান করতে হবে। মাছজাত পণ্য রফতানি করতে হবে। পাঙ্গাস, তেলাপিয়াসহ অন্যান্য চাষকৃত মাছ রফতানি না করলে অধিক উৎপাদন ব্যয় ও নিম্ন বাজার মূল্যের ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। বাংলাদেশ আজ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়নি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ সেক্টরের উন্নয়নে আরও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলোকে রক্ষায় কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনের পাশাপাশি প্রকৃতি পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে হবে। তবে মাছের খাদ্যের দাম, রোগবালাই ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন প্রজন্মের মাঝে মাছ খাওয়ার আগ্রহ তৈরী করতে হবে। সরকারকে এ বিষয়ে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত (বিএফআরআই) ‘বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি ও প্রস্তাবনা প্রণয়ন’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপীকর্মশালায় এসব কথা বলেন সংশ্লিস্টরা। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বিএফআরআই অডিটোরিয়ামে ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

সম্প্রসারণ কর্মী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, মৎস্য সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত উদ্যোক্তা ও মৎস্য চাষিরা জানান, দেশে বর্তমানে মাছ চাষে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন। বাজারে খাদ্যে দাম বৃদ্ধি এবং মাছের দাম কম হওয়ায় তারা মাছ চাষে লাভবান হতে পারছেন না। দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাছ চাষীদের টিকিয়ে রাখতে হলে মাছের খাদ্যের দাম কমানোর দাবি করেন তারা। সেই সাথে দেশের নতুন প্রজন্মের মাঝে মাছ খাওয়ার বিষয়ে অনীহা দূর করতে ব্যাপক প্রচার প্রচারনার দাবি জানান তারা।
বাংলাদেশ হ্যাচারি অনার্স অ্যসোসিয়েশনের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে মাছ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মাছের দাম কমে যাওয়ায় বড় বড় উদ্যোক্তারা মাছ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে ভবিষ্যতে এ খাতে বড় ধরনের সমস্যার সম্ভবনা রয়েছে। মাছের খাদ্যের দাম কমানোর উপর জোর দেন তিনি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসররা জানান, দেশে মাছের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির দিকে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে মান সম্মত উপায়ে মাছ চাষ করতে হবে। নতুন নতুন বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দেন তাঁরা।
বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, ইনস্টিটিউটের গবেষণা ও নানা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে মাছ চাষে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। সরকার নতুন নতুন প্রজেক্ট দিচ্ছেন। বর্তমানে মাছ চাষে কিছু সমস্যা থাকলেও তা শীঘ্রই দূর হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ক্যক্ত করেন তিনি।

বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যািলয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ময়মনসিংহ) মো. রেজাউল করিম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. খলিলুর রহমান।

দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় ২৩ টি প্রকল্পের অগ্রগতি ও ৭ টি নতুন প্রকল্পের বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, মৎস্য সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত উদ্যোক্তা ও মৎস্য চাষিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: