এবার ভেটেরিনারিয়ানদের হেয় করলো ব্র্যাক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষকের পর এবার ভেটেরিনারিয়ানদের হেয় করল বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক। ব্র্যাকের অন্যতম কর্মসূচির মধ্যে ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন কর্মসূচী কর্তৃক প্রচারকৃত গাভীর ওলান ফোলা রোগে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারকৃত লিফলেটে গাভীর ওলান ফোলা রোগের প্রয়োজনীয় টেষ্ট করানো সহ নানা সচেতনতা মূলক তথ্য প্রদানের পর এ রোগের প্রতিকার এবং রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

কিন্তু বাংলাদেশ ভেটেরিনারি প্রাকটিশনার অডিন্যান্স ১৯৮২ অনুযায়ী দেশের প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা দেওয়ার বৈধতা একমাত্র রেজিষ্টার্ড ভেটেরিনারিয়ানদের ই রয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর এ বিষয়ে দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করে যাচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে প্রতি বছর ব্র্যাক তার সকল ভেটেরিনারি বিষয়ক কর্মকান্ডে রেজিষ্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান নিয়োগ দিয়ে থাকলেও এসব ভেটেরিনারিয়ানদেরকে বাদ দিয়ে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কর্মীদের মাধ্যমে রোগের লক্ষণ, রোগ নির্ণয় এবং রোগের প্রতিকারসহ অন্যান্য ভেটেরিনারি কর্মকান্ড সম্পন্ন করানো হচ্ছে যাহা রেজিষ্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা করানোর কথা এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি প্রাকটিশনার অডিন্যান্স ১৯৮২ আইন অনুসারে এর বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

কিন্তু ব্র্যাকের মত এমন বৃহত্তম একটি প্রতিষ্ঠান এসব আইনের তোয়াক্কা না করে স্বল্প সময়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রজনন কর্মীদের দ্বারা উক্ত কর্মকান্ড গুলো করানোর ফলে একদিকে প্রান্তিক খামারিরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তেমনি খামারিরা সঠিক তথ্য ও সেবা থেকে বাদ পড়ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের রেজিষ্টার্ড ডা. ইমরান হোসেন খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবুজবাংলাদেশ24.কম-কে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। তিনি বলেন ভেটেরিনারি প্রাকটিশনার অডিন্যান্স অনুযায়ী শুধুমাত্র রেজিষ্টার্ড ভেটেরিনারিয়ানরাই পশুপাখির রোগ নির্নয়, চিকিৎসা ও প্রতিকারের বিষয়ে কাজ করতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ব্রাকের সংঙ্গে আজকের মিটিংএ ভেটো দেওয়ার কথা আছে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ব্র্যাকের ডিরেকটর তোফিকুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, উল্লেখিত তথ্যের বিষয়ে প্রজনন কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে যাতে তাদের মাধ্যমে ব্রাকের নিয়োগকৃত ২৪ জন রেজিষ্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান এসব সেবা দিতে পারেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভেটেরিনারি ডাক্তার বলেন, যদি উক্ত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে স্বল্প সময়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রজনন কর্মীদের কাছে যাওয়া হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উক্ত বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী প্রদানের প্রয়োজনীয়তা কোথায়?

উল্লেখ্য, ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন কর্মসূচী ছাড়াও ব্র্যাক ডেইরি এন্ড ফুড প্রজেক্ট, ব্র্যাক চিকেন, ব্র্যাক এস.টি.ইউ.পি, ব্র্যাক পোল্ট্রি এন্ড ক্যাটল ফিড ছাড়াও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচীতে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানরা কর্মরত রয়েছেন। ব্র্যাকের উক্ত কর্মসূচী কর্তৃক এরুপ প্রচারণা পারত পক্ষ্যে দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে নিয়োজিত ভেটেরিনারিয়ানদের চরম অবমাননার সামিল এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি প্রাকটিশনার অডিন্যান্স এর ধারা ২১ এর উপধারা (১) ও (২)এর পরিপন্থি যা লঙ্ঘন করলে কারাদন্ডসহ আর্থিক জরিমানার কথা উল্লেখ আছে।

ব্র্যাকের মত এমন খ্যাতিসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানের এরুপ কর্মকান্ডে দেশের সচেতন মহলসহ ভেটেরিনারির ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: