খাদ্যে ভেজাল বন্ধ হোক

জাহিদ হাসান:
বেঁচে থাকার জন্য আমাদের খাবারের প্রয়োজন। তবে সে খাবারে ভেজাল থাকলে তা আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকারই প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। দুঃখজনক হলেও সত্যি, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর প্রবণতা আমাদের সমাজে ইদানীং খুব বেড়ে গেছে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে নির্দ্বিধায় তা জনসাধারণের মাঝে বিক্রির মত অমানবিক কাজ প্রতিনিয়ত করে চলেছে। আর এই ভেজাল ব্যবসায় ফুটপাতের ছোটখাট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নামীদামি সুপারশপের জড়িত থাকার চিত্রও পত্র পত্রিকায় নিয়মিত উঠে আসছে।

কয়েকটা টাকা বেশি পাওয়ার জন্য মানুষের জীবন নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলার আগে ওসব ব্যবসায়ীর দ্বিতীয়বার ভেবে দেখা উচিত। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া আমাদের সবার অধিকার। সে জন্য আমরা চাই, খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত সে খাদ্য নিরাপদ থাকুক। অসাধু ব্যবসায়ীরা জবাবদিহিতা ও শাস্তির আওতায় আসুক। খাদ্যে ভেজাল বন্ধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার হোক।

আমরা বিশ্বাস করি, ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছা থাকলেই দেশে ভেজাল খাদ্য বন্ধ করা সম্ভব। কারণ তাদের আমদানিকৃত ও কারখানায় উৎপাদিত পণ্য নিয়েই খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সৎ ব্যবসায়ীদের মূল্যায়ন ও ভেজাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

মৌসুমি ফলমূলে বাজার এখন সয়লাব। রোজার মাসও শুরু হয়ে গেছে। কিছুদিন পরেই ঈদ। এই সময়টায় বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানোর হার অনেক বেড়ে যায়। তাই জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশাসনকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট কঠোর হতে হবে। যে সব কারখানায় খাদ্য উৎপাদন করা হয় সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে ও ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। ইদানীং বিভিন্ন সুপারশপের খাবারেও ভেজাল পাওয়ার কথা পত্রিকার খবরে নিয়মিত আসছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

সাধারণত সুপারশপের খাদ্যপণ্যে মানুষের আস্থা অনেক বেশি থাকে। তাই এসব বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ভেজাল খাবার কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার আইনের সত্যিকার বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরী। খাদ্য আমদানী ও উৎপাদন পর্যায়ে ভেজাল বন্ধ করতে পারলে খুচরা পর্যায়ে এমনিতেই ভেজাল বন্ধ হয়ে যাবে। নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির জন্য সমাজের সবাই মিলে ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3