গোলাপ চাষ করে সাবলম্বী সাভারের চাষীরা (ভিডিও)

সাভার সংবাদদাতা:
সৌন্দর্য ও লাবণ্যের প্রতীক গোলাপ। বর্ণ, গন্ধ, কমনিয়তা ও সৌন্দর্যের বিচারে গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। পুষ্পপ্রেমীদের সবচেয়ে প্রিয় ফুল গোলাপ। এটি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জলবায়ুতে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারে বলে পৃথিবীর সব দেশেই সারাবছর কমবেশি গোলাপের চাষ হয়।

গোলাপ সাধারণত কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, বাগান, লন, কেয়ারি, বারান্দা সাজাতে গোলাপের জুড়ি নেই। আতর ও সুগন্ধিশিল্পেও গোলাপের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আর এ ফুল চাষে ব্যস্ত সময় পর করছেন সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের চাষিরা।

এ এলাকার চাষিরা এখন ফসল চাষ না করে গোলাপসহ বিভিন্ন ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। সাভার উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৭ হাজার ৫৮০ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে প্রায় আড়াই শ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করা হয়।

বেশ কয়েক বছর আগে এ এলাকার কৃষক আবদুল খালেক, মুসা মিয়া, জমসের, মতি, নূর মোহাম্মদসহ অনেকেই ফুল চাষ শুরু করেন। এখন এর ধারাবাহিকতায় এ এলাকায় চাষির সংখ্যাও কম নয়। প্রতিটি গ্রামের কৃষক ও পরিবারের সদস্যরা এ ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত। আর এ ফুল চাষে প্রতিটি কৃষক পরিবার স্বাবলম্বী ও লাভবান হচ্ছে।

ঢাকা শহরের ফুলের পাইকারি বাজারসহ বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকারি বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে সাভারের ফুল। আর ওইসব বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে চাহিদামতো সাধারণ মানুষের হাতে। বিশেষ দিন, বিশেষ সময়, বিয়ে, শ্রদ্ধা নিবেদন, শিক্ষা ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ফুলের তুলনা নেই বললেই চলে। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, মোস্তাপাড়া, কাকাবর, সাদুুল্লাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বাহারি ফুলের চাষ করা হচ্ছে।

স্থানীয় ফুলচাষি আশরাফ আলী জানান, আমি ৩০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করছি। গোলাপ, জারবারা, গ্লাডিওলাসসহ কয়েক জাতের ফুলের বাগান করেছি। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আমাদের ফুলকাটা, জমি ও গাছের পরিচর্যা করতে হয়।

বাগ্নীবাড়ী এলাকার ৭ বিঘা জমিতে গোলাপ, ওয়ালিয়া ও খাগান গ্রামের ২০ বিঘায় গেলোরিয়াস ও আইঠর গ্রামে ৩ বিঘা জারভার ফুল চাষ করেছেন আশরাফ। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ফুল কেটে স্থানীয় ফুলের হাটে নিয়ে যেতে হয়। পরে ওই বাজার থেকে স্থানীয় ও বাইরে থেকে আসা পাইকাররা ফুল কিনে নিয়ে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান। ৭ বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা। এ গোলাপের বাগানটি ভালো করে পরিচর্যা করলে ১৫ বছর গোলাপ ফুল পাওয়া যাবে বলেন তিনি।

ফুলচাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৬ই ডিমেম্বর, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবসসহ বিভিন্ন বিশেষ দিনে ফুলের ভালো দাম পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রতিটি ফুল আমাদের এক টাকা থেকে শুরু করে তিন টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারি। বিক্রির সময় ৫০টি ফুলে এক আঁটি ও ৩০০ ফুলে এক বান্ডিল হিসাবে বিক্রি করতে হয়।

পাইকার রফিক মিয়া জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরুলিয়া এলাকার ৪টি পাইকারি হাট থেকে আমরা ফুল কিনে ঢাকা আগারগাঁও ও শাহবাগে পাইকারি বাজারে বিক্রি করি। প্রায় ৭০-৮০ জন স্থানীয় পাইকার ও বাইরে থেকে প্রায় ১০০ পাইকার এসে এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যান। রাত ৩টার পরে এখান থেকে বাসে করে বিভিন্ন জেলা শহরে এ ফুল চলে যায়।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: