স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা গৃহবধূর রুমির

জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলায় স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে  আত্মহত্যার

চেষ্টা করেছেন রুমি বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূ। এতে রুমির বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিদগ্ধ হয়। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী রায়হান মিয়াকে (২৩) আটক করেছে।

গুরুতর অগ্নিদগ্ধ রুমিকে উদ্ধার করে প্রথমে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে শুক্রবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সাদুল্যাপুর উপজেলার চাঁদকরিম গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। রুমি বেগম সাদুল্যাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে। রায়হান মিয়া সাদুল্যাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চাঁদকরিম গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে।

রুমি বেগমের বাবা রেজাউল করিম দ্য রিপোর্টকে জানান, রুমি প্রেম করে তিন বছর আগে পালিয়ে গিয়ে রায়হানকে বিয়ে করে। পরে উভয় পরিবার বিবাহ মেনে নিলে তারা বাড়ীতে এসে সংসার শুরু করেন। সংসারে তাদের নয় মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য রুমির উপর চরম নির্যাতন চালায় স্বামী রায়হান ও তার বাড়ির লোকজন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে তিনি একবার ৫০ হাজার টাকা দেন। এরপর আবারও মোটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য রুমির উপর নির্যাতন শুরু হয়।

রুমি আক্তারের ফুফু বিউটি বেগম ও ভগ্নিপতি শাহীন মিয়া দ্য রিপোর্টকে জানান, প্রতিবেশিদের মাধ্যমে রুমির অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সংবাদ পান। পরে হাসপাতালে ছুটে এসে চিকিৎসাধীন রুমিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের নির্যাতনেই রুমি গায়ে আগুন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।

সাদুল্যাপুর থানার উপ-পুলিশ কর্মকর্তা (এসআই) রনি কুমার দাস দ্য রিপোর্টকে জানান, যৌতুকের জন্য নির্যাতন সইতে না পেরে রুমি নিজেই নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব চন্দ্র রায় দ্য রিপোর্টকে জানান, আগুনে রুমির বুক, পেট ও পিঠের ৩০ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে। দুই স্তন অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় রুমি তার নয় মাস বয়সি সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে পারছেনা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিকেলে রুমিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ ইমরুল কায়েস দ্য রিপোর্টকে জানান, সংবাদ পেয়ে নির্যাতনকারী স্বামী রায়হান মিয়াকে (২৩) আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় রুমির বাবা রেজাউল করিম বাদী হয়ে রুমির স্বামী রায়হান, শ্বশুর তারা মিয়া ও শ্বাশুড়ীসহ তিন জনকে আসামী করে সাদুল্যাপুর থানায় শুক্রবার বিকেলে মামলা দায়ের করেছেন। অন্যদের আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: