ঈদে বাকৃবিতে কেমন যাবে কর্মজীবীদের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করতে ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

প্রজ্ঞাপন মোতাবেক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ৫ এপ্রিল থেকে প্রায় ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে যাচ্ছে।

ঈদের বাড়ি যাবার আনন্দ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকলেও ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাদের জীবন ও জীবিকা তাদের মধ্যে বেড়ে গিয়েছে উপার্জন কমে যাওয়ার শঙ্কা। বলছি রিকশা চালক, মুদি দোকান, হোটেল ব্যাবসায়ীদের কথা।

বাকৃবির কে আর মার্কেটে অবস্থিত মুদি দোকান বিনিময় স্টোরের দোকানি উমায়ের বিন আজিজ বলেন, শিক্ষার্থীরা সবাই চলে গেলে আমাদের বিক্রি অনেকাংশেই কমে যাবে। আমার দোকান থেকে ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই কেনাকাটা করে। ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা চালু থাকলে শিক্ষার্থীরা সবাই উপস্থিত থাকে এবং তাদের কাছে প্রতিদিন প্রায় গড়ে দশ হাজার টাকার মতো কেনাবেচা হয় যা আমার উপার্জনের বড় একটা অংশ। ঈদের ছুটিতে সে আয় থেকে আমি বঞ্চিত হবো।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ক্যান্টিনের মো. হোসাইন বলেন, হলে ছাত্ররা সবাই থাকলে দৈনিক ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার বেচাকেনা হয়। রোজার শুরু থেকে হলে ইফতারি আইটেমও বিক্রি করেছি৷ কিন্তু শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে বাড়ি চলে যাওয়ায় আমার বিক্রিও কমে গেছে। ৫ তারিখ থেকে বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

এছাড়াও বাকৃবির শেষ মোড়ে অবস্থিত বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড বিরিয়ানী হাউজের মালিক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমার হোটেলের ব্যবসা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থী নির্ভর। ১০০ জনের মধ্যে ৮০ জন কাস্টমারই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সাধারণ সময়ে দিনে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেচাকেনা হলেও ঈদের ছুটির এই কয়দিন ৫ হাজার টাকা বেচাকেনা করতে পারবো কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বেচাকেনা একেবারেই কমে গেলে হোটেল বন্ধ রাখতে হবে।

বাকৃবির কে আর মার্কেটের জয়নাল ফটোস্ট্যাটের জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার ফটোকপির দোকানের আয়-রোজগার নির্ভরশীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা চলার উপর। ওই সময়েই শিক্ষার্থীরা লেকচারশীট কিনে।

ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে না থাকায় আমার ব্যবসা পুরোপুরিভাবে বন্ধ থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অটোরিকশা চালক মোমেন আকন্দের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আপনারাই (শিক্ষার্থীরা) আমার দৈনন্দিন জীবনের উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম। আপনারা ঈদের ছুটিতে চলে যাবার পর রিক্সা চালানো বন্ধ রাখতে হবে।

তবে ঈদের সময় বাকৃবিতে প্রচুর পরিমাণে দর্শনার্থী বেড়াতে আসায় তখন কিছু উপার্জনের আশা করছেন বলে জানান এই রিক্সাচালক।

  •  
  •  
  •  
  •