মসজিদ-মাদরাসাগুলো করোনা সেন্টারে রুপান্তর করছেন ভারতের মুসলমানরা

india

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ করোনা ভয়ঙ্কর আক্রমণ চালিয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ ভারতে। তবে এই কঠিন সময়ে ধর্মের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে মানবতার বন্ধন আরো পাকাপোক্ত করলেন দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়।

ভারতে প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। দিল্লি ও মহারাষ্ট্র অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্যখাত ধসে পড়েছে। দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের তীব্র সংকট। হাসপাতালেও পর্যাপ্ত বেড পাচ্ছেন না রোগীরা। এমন অবস্থায় মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের মুসলমানরা। তারা মসজিদ, মাদরাসাগুলো করোনা সেন্টারে রুপান্তর করেছেন।

আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মুসলিম সংস্থা ভারতের করোনা সংকট মোকাবিলা নিয়ে কাজ করছে।

দেশটির পশ্চিমে গুজরাটে ভাদোদারা শহরে একটি মাদরাসায় কোভিড রোগীদের জন্য বেড, ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে রোগীরা আইসোলেশনেও থাকতে পারেন।

সেখানকার প্রিন্সিপাল মুফতি আরিফ আব্বাস বলেন, পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। আমরা কোভিড রোগীদের জন্য মাদরাসা উন্মুক্ত করেছি। আমরা মানুষের সেবা করতে চাই।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহ ধরে সেখানে করোনা রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ভাদাদারার মসজিদের একটি অংশেও কোভিড রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

শুধু গুজরাট নয়, দিল্লিতেও একটি মসজিদকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার বানানো হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের বরাতে জানা যায়, দিল্লির ওই মসজিদটির নাম গ্রিন পার্ক মসজিদ। সেখানে বিশেষভাবে কোয়ারেন্টিন সেন্টার বানানো হয়েছে। যাতে রয়েছে মেডিকেল সাপোর্টসহ ১০টি বেড। এছাড়া রোগীদের মাস্ক, সেনিটাইজার ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এছাড়া সেখানকার মুসলমানরা করোনা রোগীদের জন্য হেল্পলাইন (মোবাইল কল), ওষুধ, ত্রাণ ও সুরক্ষাসামগ্রী নিয়েও কাজ করছেন।

এ প্রসঙ্গে গ্রিন পার্ক মসজিদের ম‌্যানেজিং কমিটির যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘দিন দিন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। মানুষও অনেক কষ্ট পাচ্ছে। যার কারণে আমরা মসজিদে কোয়ারেন্টাইন তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এখানে ১০টি বেড আছে। এখানে আসার জন‌্য আমরা মানুষের কাছ থেকে ফোন কল পাচ্ছি। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী লোকজনকে ভর্তি করছি আমারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওষুধ, মাস্ক, সেনিটাইজার, পিপিই’র ব‌্যবস্থা করেছি। আমরা তাদের খাবারেরও ব‌্যবস্থা করেছি। কিন্তু দুঃখজনক যে আমরা এখনও অক্সিজেনের ব‌্যবস্থা করতে পারিনি। তবে চেষ্টা চলছে। দ্রুতই এর ব‌্যবস্থা করতে পারবো।’

চলতি বছর এপ্রিল থেকে প্রতিদিনই ভারতে তিন লাখের বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় এবং মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। শুক্রবার থেকে শনিবার (০১ মে) সকাল পর্যন্ত দেশটিতে সবশেষ একদিনে শনাক্ত হয়েছে রেকর্ড চার লাখের বেশি। আর মারা গেছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ।

  •  
  •  
  •  
  •