রাশিয়া কি পরমাণু যুদ্ধ শুরু করবে?
অঙ্গন সমদ্দার: গত ২৪শে ফেব্রুয়ারী রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করে এবং ২৮শে ফেব্রুয়ারী ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন তিনি তার রুশ পরমাণুবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুতিন কি আসলেই ইউক্রেনের উপর পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে?
অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুতিন যতই পারমাণবিক হামলার ঘোষণা দিক না কেন, সত্যিকার অর্থে এই হামলার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। এর পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
প্রথমত, Nuclear Deterrence Theory অনুযায়ী দুটি পক্ষের কাছেই যখন সমান সংখ্যাক পরমাণু অস্ত্র থাকে তখন একটি পক্ষ অন্য পক্ষকে সচরাচর আক্রমণ করে না। কারণ একপক্ষ আক্রমণ করলে তার প্রত্যুত্তরে অপর পক্ষও আক্রমণ করবে। ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র না থাকলেও বর্তমানে ফ্রান্স, জার্মানি সহ ন্যাটো ইউক্রেনকে প্রত্যক্ষভাবে অস্ত্রদিয়ে সহায়তা করছে৷ তাই রাশিয়া পরমাণু হামলা চালালে, ইউক্রেন ন্যাটো কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে পরমাণু হামলা চালাতেই পারে।
দ্বিতীয় কারণ হলো, রাশিয়ার এই যুদ্ধ জেতার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহার করার দরকারই পড়বে না। ন্যাটো অস্ত্র সহায়তা দিলেও, বর্তমান ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টোলেনবার্গ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি ঘোষণা দিয়েছেন তারা ইউক্রেনে কোন সৈন্যবাহিনী পাঠাবেন না৷ ফলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর থেকে প্রবল শক্তিশালী রাশিয়া সৈন্যবাহিনীর এই যুদ্ধে জয় অবশ্যম্ভাবী।
এর বাইরে আরেকটি কারণ হলো, ম্যাডম্যান থিওরী। এই থিওরি অনুযায়ী একটি দেশের রাষ্ট্র প্রধান যখন অনেক বেশি আক্রমনাত্মক আচরণ করেন তখন তাকে ম্যাডম্যান থিওরী বলে৷ এদের এইরুপ আচরণ করার কারণ হলো কেবলমাত্র তাদের প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানো, বাস্তবিক পক্ষে তারা কখনো তাদের ঘোষণা বাস্তবায়ন করেন না। যেমন, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া সংকটের সময়ও পুতিন পরমাণু যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন যেটি তিনি বাস্তবায়ন করেননি।
ম্যাডম্যান প্রেসিডেন্ট এর অন্যতম উদাহরণ হলেন সাবেক আমেরিকা প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তাই উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে বলা যায় যে, রাশিয়ার কর্তৃক ইউক্রেনে পরমাণু হামলার আশঙ্কা অত্যন্ত কম।