বিচারকের সিল-সই নকল করে রিকশাচালককে গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক:

বরগুনায় বিচারকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় গ্রেপ্তারকৃত এক আসামিকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আজ রবিবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম তাকে মুক্তি দিয়েছেন।

মুক্তির আদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন- ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের হাসমত আলী হাসুর ছেলে বুলবুল ইসলাম বুলু (৩৮)। বুলবুল পরিবারে পাঁচ ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার বড়। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। অটোরিকশা চালিয়ে সারাদিন যা রোজগার করেন তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার। গত ২১ জানুয়ারি বাড়ির সামনে থেকে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ত্রিশাল থানা পুলিশ।

বুলবুলের আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু বলেন, ‘বুলবুলের নামে ৩০ নভেম্বর সেশন কেস নম্বর ৭৯১/২০২০ বরগুনা জজ কোর্ট থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে। সেই মামলার অস্তিত্ব বরগুনা জজ কোর্টে নেই। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম বুলবুল ইসলাম বুলুকে ময়মনসিংহ জেল সুপারকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।’

জানা যায়, বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলামের আদালতের সিল ও তাঁর সাক্ষর জাল করে একটি প্রতারক চক্র গত বছরের ৩০ নভেম্বর ওই আসামির বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের নিকট পাঠায়। ওই ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় ময়মনসিংহ জেলার গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. মঞ্জুরুল হক ২১ জানুয়ারি বুলবুল ইসলাম বুলুকে গ্রেপ্তার করে। পরে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় তাকে।

স্বজনদের দাবি, ময়মনসিংহ জেলার বাইরে কখনো কোথাও যাওয়াই হয়নি বুলবুলের। তবে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি বিনাদোষে ১১ দিন ধরে কারাগারে থাকায় দিশেহারা ভুক্তভোগী পরিবার।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, “আমরা আমাদের রেজিস্ট্রারপত্র পর্যালোচনা করেছি। তাতে দেখা গেছে ২০১৮ সালের ১৭ নম্বর মামলাটি কোনো অস্ত্র আইনে করা নেই। তাছাড়া এই মামলায় বুলবুল নামের কোন আসামি নেই।”

এ ব্যাপারে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বলেন, “বাইরের জেলা থেকে যে সমস্ত ওয়ারেন্ট আসে সেগুলো সাধারণত প্রথমে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যায়। সেখান থেকে তা কোর্ট ইন্সপেক্টরের কাছে পাঠানো হয় তারপর প্রক্রিয়া মোতাবেক আমাদের কাছে আসে। পরে আমরা ওই আসামিকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করি। ওয়ারেন্ট যাচাইয়ের সুযোগ আমাদের হাতে নেই।”

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3