সড়ক দুর্ঘটনায় রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন
রাবি প্রতিনিধি:
সড়ক দুর্ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী সোহাগের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্ৰহনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় (০২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে এক প্রতিবাদী মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্যারিস রোডে সমবেত হয়।
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী বিপ্লবের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহ আলম, অধ্যাপক ড. এম. হুমায়ুন কবির, ড. মো. সাইয়েদুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নুর। এসময় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলী ছাড়াও তিনশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে অধ্যাপক ড. দিল আরা হোসেন বলেন, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, হানিফ পরিবহনসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের ড্রাইভাররা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায। আমি এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছি। আমি শিক্ষার্থীদের এই গাড়িগুলোতে না চড়ার জন্য বলবো। আজকে সোহাগের মৃত্যুতে সারাজীবন তার পিতা-মাতাকে দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করতে হবে। আমরা আইনগত প্রক্রিয়ায় যেতে পারছিনা। আমরা শুধু নিরাপদ সড়কের দাবি তুলতে পারি। এ বিষয়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। যদি একজন ড্রাইভারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতো। তাহলে হয়তো দুর্ঘটনার পরিমাণ কিছুটা হলেও কমতো । আমরা আসুন এই ভয়ঙ্কর গতির গাড়ি বর্জন করি।
মানববন্ধনে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, আমরা এখানে দুই গ্রুপ রাস্তায় নেমেছি। এক গ্রুপ শিক্ষক আরেক গ্রুপ শিক্ষার্থী। এই দুই গ্রুপ রাস্তায় নেমে আসার কোন কারণ নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পাঠদান করি। শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। আমাদের কার্যক্রম শ্রেণি কক্ষে। কিন্তু আজ আমাদের রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলতে হচ্ছে। আমরা গভীর ভারাক্রান্ত, ব্যাথিত ও মর্মাহত। ৩১ তারিখে ন্যাশানাল ট্রাভেলসের যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, হিসাববিজ্ঞান পরিবার মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছে। আমাদের এমবিএর ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভ সোহাগ এই দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেছে। সোহাগ ছেলেটা খুবই বিনয়ী ছাত্র। তার কথাবার্তা, ভাবভঙ্গি ও আচার-আচরণ একটা বিনয়ী প্রকাশ পেতো।ঔ আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
প্রসঙ্গত, মো. সোহাগ মিয়া হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্ৰামের বাসা নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার বালুসাইর গ্ৰাম। গত ২৭ ডিসেম্বর (২০২১) এমবিএ প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ করেন তিনি। পরীক্ষা শেষে গত ৩১ ডিসেম্বর (২০২১) বাড়ি যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলসের বাস উল্টে নিহত হন তিনি। এই দুর্ঘটনায় সোহাগ ছাড়াও অন্তত ৪ জন ব্যক্তি নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।