
নীলফামারীতে আমনে ধানে পোকার প্রাদুর্ভাব

নীলফামারী সংবাদদাতা:
নীলফামারীতে চলতি মৌসুমে এবার জেলার বেশ কিছু এলাকার আমন ক্ষেতে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছে কৃষকরা। আমনের চারা রোপনের পর থেকে অনাবৃষ্টি, তাপদাহ, বিএলবি, কারেন্ট পোকা, টুংরো ও পাতা পোড়া সহ নানা রোগে আমন ক্ষেত আক্রান্ত হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সূত্র মতে এ বছর ১ লাখ ১২হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। কৃষকরা জানান আমন চারা রোপনের পর তাদের সামর্থ অনুযায়ী নিড়ানি সহ সকল ধরনের পরিচর্যা করেছিল। চারাকে সুস্থ, সবল ও সতেজ করতে প্রয়োগ করেছে নানান ধরনের জৈব ও রাসায়নিক সার। ক্ষেতকে পোকামাকড়মুক্ত রাখতে প্রয়োগ করেছে কীটনাশক। প্রাকৃতিকভাবে পোকা দমনে ক্ষেতে দিয়েছে কঞ্চি। রোপন করেছে ধইঞ্চা। যাতে পাখি বসে অনায়াসে পোকা খেতে পারে। এতকিছুর পরেও ধানের শীষ বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে কারেন্ট পোকা, টুংরো ও পাতা পোড়া বা পাতা ঝলসানো রোগে।
নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের বাজার মৌজা গ্রামের কৃষক সিদ্দিক আলী, আশরাফ আলী, পৌরসভার হারোয়া গ্রামের মিরাজুল, হবিবর রহমান সহ অনেক কৃষক জানান তাদের আমন ক্ষেতে এবার কারেন্ট পোকা সহ নানা রোগ দেখা দিয়েছে। রোগ দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানান তারা। নীলফামারী পৌরসভার হারোয়া গ্রামের কৃষক কয়া মামুদ জানান তার এক বিঘা জমিতে আমন চারা রোপনের পর গাছ লগলগে বেড়ে উঠে। কিন্তু শীষ বের হওয়ার পূর্ব মুর্হুতে কারেন্ট পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দেয়। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হয়নি। ফলে তার এই এক বিঘা জমিতে ৫ মনও ধান হবে না বলে তিনি জানান।
ডোমার উপজেলার মৌজাপাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র রায় জানান, তার পুরো ক্ষেত এ বছর শীষ বের না হবার রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পুরো ধান ক্ষেতের পাতা শুকিয়ে গেছে। কিছু কিছু পাতা ধারণ করেছে হলুদ বর্ণ। এ মৌসুমে তিনি খরচের টাকাও তুলতে পারবেন না বলে আশংকা করছেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার মধ্য রাজীব গ্রামের কৃষক তারাজুল ইসলাম জানান, তার বেশ কিছু আমন ক্ষেত পোকার আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ ইদ্রিস সাংবাদিকদের জানান, থোড় আসার আগ মুর্হুত পর্যন্ত ক্ষেতে কোনো রোগ বালাই ছিল না। হঠাৎ করেই টুংরো ও পাতাপোড়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে বেশ কিছু এলাকার আমন ক্ষেত। তিনি বলেন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য এসব ক্ষেতের নমুনা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.