ব্যালট পেপারের ছবি তোলা জটিলতায় আটকে আছে বাকৃবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন

আরিফুল ইসলাম, বাকৃবি থেকে:
ভোট প্রদানের পর ওই ব্যালট পেপারের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে জটিলতায় দুই মাস ধরে আটকে আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। গত ৯ মার্চ শিক্ষক সমিতির কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কমিটির মেয়াদ দুই মাস পেড়িয়ে গেলেও ব্যালটের ছবি তোলার বিষয়ে সমঝোতায় না আসায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম।
বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালীদল ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম অনতিবিলম্বে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। পৃথক বিবৃতির মাধ্যেমে ওই দুই শিক্ষক সংগঠন অতিদ্রুত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু কমিটির মেয়াদ দুই মাস পেড়িয়ে গেলেও এখনও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।

শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা যায়, বাকৃবির শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ সভা গত ২২ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল। সভায় ব্যালট পেপারের ছবি তোলা হলে ভোট বাতিল হবে কিনা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আলোচনা শুরু হয়। অধিকাংশ শিক্ষক বলেন, শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। কোন পক্ষেরই কোনো শর্তারোপ উচিত হবে না। কোন ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়াই ওইদিনের সভা মূলতবি ঘোষণা করা হয়। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের কতিপয় শিক্ষক নির্বাচনে তাদের পরাজয় ঠেকাতেই ভোট প্রদানের পর ওই ব্যালট পেপারের ছবি তোলার পক্ষে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালীদল এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

এদিকে ব্যালটের ছবি তোলার দাবি নাকচ করে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে আমরাও চাই অতিদ্রুত নির্বাচন হোক। শিক্ষক সমিতি না থাকায় শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কাজই থেমে আছে। ব্যালটের ছবি তোলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমরাও সমর্থন করি না।

সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে কোন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ না করার দাবি জানাই। আমরা অতিদ্রুত নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, সুষ্ঠু এবং সকলের গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানাই।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, নির্বাচনে ‘ব্যালটের ছবি তোলা’ হলে এবং তা প্রমাণিত হলে তার ভোটটি গণনা করা হবে কিনা কিংবা এ নিয়ে মতবিরোধ থাকায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষক সমিতির সংবিধান অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য আমরা প্রস্তুত।

শিক্ষক সমিতির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মাকসুদ কামাল বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কমিটি থাকা উচিত। শিক্ষক সমিতি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্গেনিং এজেন্ট।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বলেন, বিষয়টি শিক্ষকরে নিজেদের ব্যাপার। তারা নিজেরাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন। তবুও আমি দুইপক্ষের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি শীঘ্রই একটি সমাধান হবে।

  •  
  •  
  •  
  •