জুতা পায়ে বাইক নিয়ে শহীদ মিনার বেদীতে উঠলেন রাবি ছাত্রলীগ নেতা!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
রাতের আঁধারে জুতা পায়ে বাইক চালিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ মিনার বেদীতে উঠলেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টম্বর) রাত ১১টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে আড্ডা দিচ্ছিলেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। আড্ডার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে থেকে ছাত্রলীগের নেতা গোলাম রাব্বানি রবি এ কাজ করেন।

গোলাম রাব্বানি রবি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। সে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী বলে জানা গেছে।

শহীদ মিনারের মতো এমন একটি পবিত্র স্থানে যেখানে জুতা পায়ে ওঠাও নিষেধ, সেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে উঠে যাওয়া অত্যন্ত হীন কাজ বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে গোলাম রাব্বানি রবি, আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সজিব, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আশিক আজাদ, সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও রাবি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি রবিউল সরকার রুবেল ও ছাত্রলীগকর্মী ফয়সাল শহীদ মিনার চত্বরে আড্ডা দিচ্ছিলেন। আড্ডার এক পর্যায়ে গোলাম রব্বানি রবি শহীদ মিনারের সিঁড়ি ভেঙে প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতায় মোটরসাইকেল চালিয়ে উঠে পড়েন। এরপর আবার মোটরসাইকেল চালিয়েই নেমে আসেন তিনি। এসময় তার পায়ে জুতাও ছিল।

এ ব্যাপারে সাদ্দাম হোসেন সজীব বলেন, আমরা শহীদ মিনারের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। আড্ডার একপর্যায়ে রবি বাইক স্টার্ট দেয়। আমরা ভেবেছিলাম সে চলে যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করেই সে বাইক নিয়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে পড়ে। তার এই কর্মকা-ে আমরা অবাক হই। সে নেমে আসার পর এই কাজের জন্য তাকে আমরা বকাঝকা করি।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে গোলাম রাব্বানি রবির মুঠোফোনে বুধবার (১২.০৯.১৯) দুপুরে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে বিষয়টি দেশের শহীদদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম কনক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাস্কর। এটা আমাদের ভাষা শহীদদের জন্য চরম অপমানের বিষয়ও বটে। ক্ষমতাশীল একটি ছাত্র সংগঠনের নেতা যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ ও লালন করেন তার কাছ থেকে এ হেন কর্মকা- প্রত্যাশিত নয়। এ বিষয়ে আসু পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পর্যায় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু শুনিনি। তবে যদি সে এ ধরনের কাজ করে থাকে তবে সেটা অবশ্যই একটি গর্হিত কাজ। আমি তাকে ডেকে এ বিষয়ে কথা বলে দেখবো।’

  •  
  •  
  •  
  •