বাকৃবিতে ক্রপস ইনোভেশন ল্যাব এবং গাজর প্রকল্পের উদ্বোধনী সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রপস ইনোভেশন ল্যাব এবং গাজর প্রকল্পের উদ্বোধনী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ কনফারেন্স রুমে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রকল্পের প্রধান গবেষক, বাকৃবি’র উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ হারুন অর রশিদ এই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরেন। গাজর সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত এবং জনপ্রিয় একটি মূল জাতীয় সবজি। গাজরে ক্যারোটিনয়েডের উপস্থিতির জন্য এটি ভিটামিন ‘এ’ এর অন্যত্তম উৎস। গাজর বাংলাদেশে একটি শীতকালীন সবজি। সুস্বাদু ও উচ্চমূল্যের জন্য ভোক্তা ও কৃষকের মাঝে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশে গাজর উৎপাদনে অজৈবিক প্রতিবন্ধকতাগুলোর মধ্যে খরা অন্যতম যা উল্লেখযোগ্যহারে দেশে গাজরের উৎপাদন কমায় এবং কৃষকরা অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এভাবে বাজারে গাজরের সহজলভ্যতা কমে যাওয়ায় মানুষের খাদ্য তালিকার ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই পরিপেক্ষিতে খরা সহনশীল ও উচ্চ পুষ্টিগুন সম্পন্ন গাজরের জাত নির্বাচন এবং গা্জরের অধিক উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক ড. হারুন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের জন্য গাজরের উচ্চমূল্য নিশ্চিত করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান। তিনি বলেন, খাদ্যঘাটতি নিরসনে নিশ্চিতভাবেই এই ধরনের গবেষণা প্রকল্পের বিকল্প নেই। তাই তিনি এই প্রকল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকল গবেষককে অভিনন্দন জানান এবং প্রকল্পটির সফলতা কামনা করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম জাকির হোসেন বলেন, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরসাটসহ উত্তরাঞ্চলের খরা প্রবণ এলাকাগুলোতে অধিক গাজর উৎপাদনের মাধ্যমে মানুষের পুষ্টির চাহিদা এবং কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ সুষ্টি হবে।

এসময় উপস্থিত প্রকল্পটির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এম এ রহিম বলেন, দেশের মানুষের সুষম খাদ্য তালিকায় গাজর সংযোজনে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রকল্পের আন্তর্জাতিক পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউএসডিএ প্রফেসর ড. ফিলিপ সাইমন । ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনেরর সাথে পুষ্টির অন্যত্ম উৎস গাজরের অধিক উৎপাদনের মাধ্যমে বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাদিহা পূরণের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. সাইমন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও জনসংখ্যার উর্ধগতির প্রভাব প্রায় সকল খাদ্যশস্যের উপর পড়ছে। তাই খাদ্য ঘাটতি ও ক্ষুধা নিরসনে গাজর হতে পারে একটি অন্যতম শস্য।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর   প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রাব্বানী।

বাউরেস এর পরিচালক প্রফেসর ডঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন এর সভাপতিত্ত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি’র কৃষি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, এমএস ও পিএইচডি ফেলো এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

ইউএসডিএ/এআরএস – ইউএসএআইডি  ইউএসএ এর যৌথ অর্থায়নে ফিড দ্যা ফিউচার কারেন্ট এবং ইমার্জিং থ্রেটস টু ক্রপস ইনোভেশন ল্যাব এর আওতায় এই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন-ম্যাডিসন, ইউএসএ এর যৌথ আয়োজনে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

সেমিনার পরবর্তী সময়ে উপস্থিত শিক্ষক ও গবেষকদের মধ্যে প্রশ্নত্তোর পর্ব পরিচালিত হয়।

  •  
  •  
  •  
  •