বিশেষ ডুডলের মাধ্যমে জুডোর জনক কানো জিগোরোকে স্মরণ করলো গুগল

সাবরিন জাহান: গুগলের প্রকাশিত ব্যতিক্রমী আজকের ডুডলটি হয়তো নজরে এসেছে অনেকের। গুগল লোগোর মজাদার এবং আশ্চর্যজনক কিছু পরিবর্তন যা ছুটির দিন, বার্ষিকী, বিখ্যাত ব্যক্তিদের বিশেষ দিন উদযাপন করার জন্য করা হয়ে থাকে,আর এটিই হলো ডুডল।
আজ জুডোর জনক অধ্যাপক কানো জিগোরোর (Kano Jigoro) ১৬১ তম জন্মদিন। আর এই দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতেই গুগলের তরফ থেকে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ ডুডল।
জুজুৎসু খেলোয়াড় হিসাবে নামকরা কানোর জন্ম হয় ১৮৬০ সালে মিকাগে শহরে, যা বর্তমান কোবে প্রদেশ নামে পরিচিত। কৈশোরে চলে আসেন টোকিও শহরে এবং ১৮৮২ সালে টোকিও শহরে “কোডোকান জুডো ইনস্টিটিউট” নামে তৈরি করেন নিজের একটি প্রশিক্ষণ সংস্থা। সাথে থাকতেন কানোর শিক্ষক ঈকুবো সুনেতোসি। একদিন লড়াইয়ের সময়ে কিছু পাশ্চাত্য কায়দা প্রয়োগ করে কানো ধরাশায়ী করলেন ঈকুবোকে। দেখা গেল, জুজুৎসুর সবচেয়ে বিপজ্জনক কায়দাগুলি দিয়েও আত্মরক্ষা করতে না পেরে পরাজয় স্বীকার করলেন শিক্ষক। এরপর ঈকুবোর পরামর্শেই সম্পূর্ণ নতুন করে জুডোর পদ্ধতি তৈরি করেছেন কানো।
ছোটখাটো শরীরের কানোকে স্কুলের ক্লাসের শেষে অনেকসময় বন্ধুরা ধরে মারধোর করতো। আত্মরক্ষার জন্যই জুজুৎসু শিখতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই খেলাকেই বদলে জুডোর রূপ দেন তিনি। জাপানি জুজুৎসুর সঙ্গে পাশ্চাত্য মার্শাল আর্টের কিছু পদ্ধতি মিশিয়ে তৈরি করলেন জুডো (Judo)।
শারীরিক আঘাতের সম্ভাবনা কম থাকায় জুজুৎসুর চেয়ে জুডো অনেক বেশি নিরাপদ হয়ে উঠল। তাই কানোর কাছে প্রশিক্ষণ নিতে এলেন বহু ছাত্রীও। খেলার নিয়মকানুনের পাশাপাশি তার শিক্ষাপদ্ধতি নিয়েও ভাবনাচিন্তা করেছেন কানো। ব্ল্যাক-বেল্ট এবং হোয়াইট-বেল্ট ব্যবস্থার প্রচলন করেছেন তিনিই।
ছোটোখাটো চেহারার এই মানুষটি তার প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতিতে ঘায়েল করছিলেন বিখ্যাত সব রেস্টলারকেও। কালক্রমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে জুডো খেলার খ্যাতি। কানো অলিম্পিকের আন্তর্জাতিক কমিটির প্রথম এশীয় সদস্য। তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন জুডোকে অলিম্পিকে জায়গা দেওয়ার। ১৯৬৪ সালের অলিম্পিকে প্রথমবার জায়গা পায় জুডো।
অসাধারণ মানুষটির জন্মবার্ষিকীর স্মরণে একাধিক ডুডল প্রকাশ করেছে গুগল। ডুডল এঁকেছেন লস-অ্যাঞ্জেলসের শিল্পী সিনথিয়া ইউয়ান চেং।
You must be logged in to post a comment.