মাছ সংরক্ষণে ময়মনসিংহের পর লাইভ জিন ব্যাংক হচ্ছে নীলফামারী-খুলনায়ও

নিউজ ডেস্কঃ ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) উদ্যোগে দেশের প্রথম দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংক উদ্বোধন করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সদর দফতরের একটি পুকুরে দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংকের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বর্তমানে এই জিন ব্যাংকে ইতোমধ্যে ৮৫ প্রজাতির মাছের জিন সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশীয় সব মাছকে এ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হবে এবং নীলফামারীর সৈয়দপুর ও খুলনায় আরও একটি করে জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
মাছের জার্মপ্লাজম (জাত বা প্রকার) সংরক্ষণের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক একটি আধুনিক ধারণা। জিন ব্যাংক মূলত কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানের সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা। কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ যখন হুমকির মুখে পড়ে তখন জিন ব্যাংকের প্রয়োজন হয়।
প্রাকৃতিক উৎসে কোনো মাছ হারিয়ে গেলে সেসব মাছকে পুনরুদ্ধারের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক থেকে ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে লাইভ জিন ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট মাছকে হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা হবে।
দেশে মিঠা পানির মাছের মোট প্রজাতি ২৬০টি। এর মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) ২০১৫ সালের তথ্যমতে, দেশে বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি ৬৪টি। ভবিষ্যতে যেন দেশের মাছের সব প্রজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায় সে উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়েছে এই জিন ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (ডিজি) ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, একটি জিন ব্যাংক দিয়ে ভরসা করা যাবে না। হয়তো ময়মনসিংহে এমন একটা ডিজিজ হলো ব্যাংকের সব মাছ মরে গেল। আমরা তখন শূন্য হয়ে যাব। এজন্য আমরা সৈয়দপুরে মিঠাপানির প্রজাতির মাছের জন্য একটি জিন ব্যাংক করব, খুলনার পাইকগাছায় নোনাপানির মাছের জন্য আরেকটি করার পরিকল্পনা করেছি। সৈয়দপুরেরটা হবে ময়মনসিংহের রেপ্লিকা। যেন কোনো দুর্যোগে ময়মনসিংহের জিন ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হলে সৈয়দপুরেরটা দিয়ে কাজ চালাতে পারি।