উত্তর কোরিয়াকে ৫০ কোটি ডলার জরিমানা মার্কিন আদালতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মার্কিন ছাত্র ওটো ওয়ার্মবিয়ারকে জেলের মধ্যে তিলে তিলে মেরে ফেলার জন্য উত্তর কোরিয়াকে ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি জরিমানা করেছে আমেরিকার এক ফেডারেল কোর্ট।

বিচারক জানান, এই মৃত্যুর জন্য উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের প্রশাসনই দায়ী।

দেড় বছর আগে আমেরিকার সিনসিনাটি ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন ওটোর মৃত্যুর খবর পেয়েই মেজাজ হারিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লিখিত বিবৃতিতে কিমের প্রশাসনকে ‘ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর’তকমা দিয়েছিলেন। স্পষ্ট হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এমন একটা দেশকে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয়, তা আমাদের ভালই জানা আছে।’

আর মঙ্গলবার কোর্টে দাঁড়িয়ে একই কথা বলেন ওটোর মা সিন্ডি ওয়ার্মবিয়ার। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে আজও একটা অশুভ শক্তি, একটা শয়তান আছে। সেটা উত্তর কোরিয়া। ওরাই আমার ছেলেকে মেরেছে। এর বিচার চাই।’

কোর্টের রায় শুনে বরং কিছুটা শান্ত ওটোর বাবা ফ্রেড ওয়ার্মবিয়ার। তিনি বলেন, ‘লড়াইটা কঠিন ছিল। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। ছেলেকে যে কথা দিয়েছিলাম, এর শেষ দেখে ছাড়ব!’

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬-র জানুয়ারিতে বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন বছর বাইশের তরুণ ওটো। সেখানকার এক হোটেল থেকে সরকারি প্রচারমূলক পোস্টার চুরির দায়ে সে বছরই তাকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় পিয়ংইয়ং। কিমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রেরও অভিযোগ আনা হয় মার্কিন ছাত্রের বিরুদ্ধে। এর দেড় বছর পর ওটোকে ‘মানবিক’কারণে ছেড়ে দেয় কিমের দেশ।

জানা যায়, জেলে যাওয়ার পর পরই কোমায় চলে যান ওটো।

গোড়া থেকেই ওটোর পরিবারের দাবি, জেলে অমানবিক নির্যাতনের কারণেই কোমায় চলে যান তাদের ছেলে। আর উত্তর কোরিয়া জানায়, খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং ঘুমের ওষুধ খেয়েই ওটোর ওই হাল হয়েছিল। রোগের নাম বটুলিজম। মার্কিন চিকিৎসকেরা যদিও খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা ওই রোগের কোনও প্রমাণ পাননি। উত্তর কোরিয়ার জেলে ওটোর ঠিক কী চিকিৎসা হয়েছিল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা বিস্তর।

ওয়ার্মবিয়ার পরিবার উত্তর কোরিয়ার তরফে ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিল। কোর্ট বলল, সামগ্রিক জরিমানা হিসেবে ৪৫ কোটি ডলার দিতে হবে পিয়ংইয়ংকে। আর ওয়ার্মবিয়ার পরিবারকে আলাদাভাবে আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে আরও ৫১ কোটি ডলার। এতে কিমের কাছে বেশ ক়ড়া বার্তা গেল বলেই মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ।

গত জুনে সিঙ্গাপুরে কিম-ট্রাম্পের ‘ঐতিহাসিক’বৈঠকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়েছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু এখনও পিয়ংইয়ংয়ের তরফে উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের একাংশের।

  •  
  •  
  •  
  •