পানি সরবরাহ সম্পর্কে জ্ঞান নিতে বিদেশগামী ৩০ কর্মকর্তা

নিউজ ডেস্কঃ পানি সরবরাহের জ্ঞান নিতে বিদেশে যেতে চান পরমাণু শক্তি কমিশনের ৩০ কর্মকর্তা। এতে মোট বরাদ্দ  ধরা হয়েছে সাড়ে ১১ কোটি টাকা। ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফসাইট পানি সরবরাহের সুবিধাদি স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে এ সফরের প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সেমিনার, কনফারেন্স, কম্পিউটার মেরামত ও সংরক্ষণের জন্য অপ্রত্যাশিত ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্প প্রস্তাবে অপ্রয়োজনীয় নানা খাত রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গাড়ি ক্রয়ের প্রস্তাব বাদ দিতে এবং অন্যান্য অপ্রত্যাশিত খাতে ব্যয় কমাতে পরমাণু শক্তি কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এদিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি ঢাকা ওয়াসার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে পরমাণু শক্তি কমিশন। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প চলাকালীন এবং পরবর্তীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় পানীয় জল সরবরাহকরণ; এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইস্যুটিয়াল এরিয়াতে ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করাই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে পরমাণু শক্তি কমিশন।

প্রকল্পটি গ্রহণের যৌক্তিকতা এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংস্থাটি বলেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত একটি প্রকল্প। তদপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃক (ঢাকা ওয়াসা)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত স্মারকের আলোকে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে প্রকল্পের মূল কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। সেই লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে ঢাকা ওয়াসার মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে পরমাণু শক্তি কমিশন বলেছে, ঢাকা ওয়াসা এবং আরডিএ বগুড়াকে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় ডাকা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আরডিএ বগুড়া অনীহা প্রকাশ করে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, (আরডিএ) বগুড়া। আরডিএ বগুড়ার সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. ফেরদৌস হোসেন খান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে আরডিএ বগুড়া অনীহা প্রকাশ করেছে কথাটি ঠিক নয়। আমাদের একবার আলোচনায় ডাকা হয়েছিল, তখন প্রকল্প ভিজিটে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেটি আর এগোয়নি। প্রকল্পের বিষয়ে বর্তমানে আমরা কিছুই জানি না। 

এদিকে প্রস্তাবিত ডিপিপিতে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় পানীয়জল সরবরাহের প্রস্তাব করা হয়েছে। সারফেস ওয়াটার ব্যবহার না করে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের যৌক্তিকতা পুনর্গঠিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে পিইসি সভায় জানানো হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, দৈনিক ভূগর্ভস্থ থেকে ৬০০০ কিউবিক মিটারের ঊর্ধ্বে পানি উত্তোলন করলে সেটি লাল ক্যাটাগরিভুক্ত প্রকল্প। সেক্ষেত্রে এনভায়রনমেন্ট ইম্প্যাক্ট এসেসমেন্ট করা প্রয়োজন।
ওদিকে প্রস্তাবিত ডেলিগেটেড ওয়ার্কে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ রেখেছে ঢাকা ওয়াসা। যা পিডব্লিউডি এবং এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের সার্ভিস চার্জের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া সেমিনার, কনফারেন্স, কম্পিউটার মেরামত ও সংরক্ষণ বাবদ অপ্রত্যাশিত ব্যয় ধরা হয়েছে। এদিকে পিইসি সভায় প্রকল্পটির বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ অর্থ বাদ দিয়ে ডিপিপি পুনর্গঠন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্প থেকে গাড়ি ক্রয়, জ্বালানি খরচ, মেরামত খাতসহ অপ্রত্যাশিত খাত বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

  •  
  •  
  •  
  •