গাজর চাষে লাভবান নওগাঁর চাষীরা

নওগাঁ প্রতিনিধি:
গাজর এক প্রকার মূল জাতীয় সবজি। রোগ বালাই কম, স্বল্প শ্রম, উৎপাদন বেশি ও ভাল দাম পাওয়ায় গাজর আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন নওগাঁর চাষীরা। আর গাজরের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে এ জেলার গাজর। আর কৃষি বিভাগ বলছে, গাজরের আবাদ লাভজনক হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। আগামীতে নওগাঁ জেলায় আরো বেশি পরিমাণ জমিতে গাজর চাষ হবে এমনটি আশা করছেন তারা।

জানা যায়, গাজর চাষে জমি প্রস্তুত করতে ৫-৬টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। এরপর জৈব সার, পটাশ ও ইউরিয়া দিয়ে জমি প্রস্তুত করে নিয়ে বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তিন মাসের মধ্যে গাজরের আবাদ হয়ে থাকে। এর রোগ বালাই কম। প্রতি বিঘায় প্রায় ১৫০ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হয়ে থাকে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

মান্দার কুসম্বা গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, বেশ কয়েক বছর আগে এ এলাকার লোকজন গাজর কি তাই জানতো না। তিনিই প্রথমে সামান্য জমিতে গাজরের আবাদ করে ভাল ফলন ও ভাল দাম পান। পরের বছর থেকে তার দেখাদেখি ওই এলাকার কৃষকরা গাজর চাষ শুরু করেন। পরিশ্রম কম, উৎপাদন ভাল এবং দাম ভাল পাওয়ায় এলাকার প্রায় এক হাজার কৃষক এবার গাজরের আবাদ করছেন।

একই গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, এবার তিন বিঘাতে গাজরের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘা ২০ হাজার টাকা করে বন্ধক নিয়েছেন। গাজর চাষে প্রতি বিঘায় প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। জমি থেকে গাজর উঠাতে শ্রমিককে টাকা দিতে হয় না। গরু ও ছাগলকে পাতা খাওয়ানোর জন্য গাজর তুলে দিয়ে পাতা নিয়ে যায়। এতে শ্রমিক খরচও কিছুটা বেঁচে যায়।

উপজেলার শিয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক মাইদুল ইসলাম জানান, নিজের এক বিঘা এবং চার বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে মোট পাঁচ বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় প্রায় ১৩০-১৫০ মণ পর্যন্ত গাজরের উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদন ভালো এবং ভাল দাম পাওয়ায় বেশ খুশি।

বিলকরিল্যা গ্রামের হাতেম আলী জানান, এবার ৮ বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ করেছেন। প্রায় এক হাজার ২০০ মণ গাজর উৎপাদন হয়েছে। প্রতি মণ গাজর প্রায় ৪০০-৫০০ টাকা দাম পেয়েছেন। প্রথম দিকে ৬০০ টাকা মণ বিক্রি হলেও এখন একটু দাম কমেছে। আগামী বছর আরো বেশি পরিমাণ জমিতে গাজর চাষ করবো।

গৃহিনী আকলিমা বলেন, গাজর শুধু তরকারিতে সবজি হিসেবে নয় সালাত, পিঠা, হালুয়া, পায়েস তৈরী করে খাওয়া যায়। গাজর গ্যাসের জন্যও উপকারী।

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজর একটি বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ উচ্চ পুষ্টিমান সবজি। চলতি বছর এ উপজেলায় প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আগামীতে গাজর চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।

  •  
  •  
  •  
  •  

Tags: