চলনবিলে রসুনের ভালো ফলনেও কৃষক চিন্তিত

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
শস্যভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলে চলতি বছরে বিনাচাষে রসুনের আশাতীত ফলন হলেও বাজারমূল্য কম হওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। এবার তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলনবিলে রসুন চাষ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খরচ কম, ফলন ও লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় রসুন চাষে ঝুঁকছেন তারা।

এ বছর চলনবিল এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় চলতি বছরে ৪৮০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বিপরীতে ৫২৫ হেক্টর জমিতে তা উৎপাদিত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তা বেশি। চলনবিলের তাড়াশ উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, জমিতে লাগানো রসুন তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারী ও পুরুষরা।

উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চর-হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিবছর রসুনের চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হন। এ বছর ফলন ভালো হলেও দাম কম হওয়ায় সবাই পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। তিনি জানান, এ বছর তিন বিঘা জমিতে রসুনের চাষ বরেছেন তিনি। প্রতিবিঘা জমিতে সার, কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা করে। বিঘাপ্রতি রসুন ফলেছে ২৫-৩০ মণ। হাটে বিক্রি করেছেন প্রতিমণ ৪৫০-৬০০ টাকা। এতে খরচের তুলনায় দাম পেয়েছেন অর্ধেক।

গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বিলকাঠুরী গ্রামের কৃষক ফজলার রহমান জানান, গত বছর কৃষকরা প্রতিবিঘায় ৩৫-৪০ মণ করে রসুন ফলিয়েছেন। তা বাজারে বিক্রি করেছেন প্রতিমণ ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রতিমণ প্রায় ২ হাজার টাকা কমমূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলার রানীগ্রামের গ্রামের চাষি সবুজ সরকার বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। বাজারে রসুনের দাম একেবারেই কম। এমন থাকলে অনেকেরই লোকসান গুনতে হবে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় এ বছর রসুনের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা বাজারমূল্য পাচ্ছেন না। ফলে অনেকেই লোকসান গুনবেন। আশা করছি বাজারমূল্য বাড়বে।

  •  
  •  
  •  
  •  

Tags: