শেকৃবিতে নিবিড় গবেষণা বেগুনী ভুট্টার জাত উদ্ভাবনে 

নিউজ ডেস্ক:

ভুট্টার ব্যবহার দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। আজকাল বিভিন্ন খাদ্য পণ্য উৎপাদনে ভুট্টা ব্যাপক সমাদৃত। চাষ বিবেচনায় দেশে বর্তমানে ধানের পরই ভুট্টার অবস্থান। ভুট্টারও কিছু জাত রয়েছে। দানার রঙ ও তার ব্যবহারের দিক বিবেচনায় বেশ কয়েক ধরনের ভুট্টা পাওয়া যায়। যেমন- সাদা ভুট্টা, হলুদ ভুট্টা, খই ভুট্টা, বেবি কর্ন ইত্যাদি। এছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, জাপানসহ বেশ কিছু দেশে পারপল বা বেগুনী ভুট্টা নামে আরেক ধরনের ভুট্টার জাতও দেখা যায়।

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিলুর রহমান বেগুনী ভুট্টার জাত উদ্ভাবনে নিবিড় গবেষণা করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে তিনিই সর্বপ্রথম ২০১৫ সাল হতে বেগুনী ভুট্টা নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে তিনি বেগুনী ভুট্টার কিছু ফলনশীল অগ্রসারী লাইন উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০১৯ সালের মধ্যে কৃষক পর্যায়ে এ ভুট্টার বীজ সরবরাহ করতে সমর্থ হবেন বলে আশাবাদী ড. জামিলুর রহমান।

তিনি জানান, বেগুনী ভুট্টার অ্যান্থোসায়ানিন অন্যান্য কিছু ফসল যেমন- আঙ্গুর, চকবেরি, বেগুনী গাজর ইত্যাদি হতে সংগৃহীত অ্যান্থোসায়ানিনের চেয়ে ৫০ ভাগ বেশি ক্যান্সার বৃদ্ধি রোধ করতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা যায়, বেগুনী ভুট্টার অ্যান্থোসায়ানিন ২০ ভাগ ক্যান্সার সেলকে মেরে ফেলতে পারে। এছাড়াও বেগুনী ভুট্টার অ্যান্থোসায়ানিন স্থুলতা ও ফুলে যাওয়া (অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরী) প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরও বলেন, এক ধরনের পানিতে দ্রবীভূত পলিফেলোলিক জাতীয় ফ্ল্যাভিনয়েড অ্যান্থোসায়ানিন যৌগ থাকায় অপরাপর জাতের ভুট্টার জাতগুলির চেয়ে এই জাতীয় ভুট্টা স্বতন্ত্র, দৃষ্টিনন্দন, স্বাস্থ্যকর ও আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। ১০০ গ্রাম বেগুনী ভুট্টার আটায় প্রায় ৬২.৭ মিলিগ্রাম অ্যান্থোসায়ানিন পাওয়া যায়। এর প্রধান উপাদান সায়ানিডিন-৩ -গ্লুকোসাইড নামক এক প্রকার রাসায়নিক রঞ্জক।

উদ্ভাবিত এ বেগুনী ভুট্টার জাতের দানা, পুরুষ ফুল (টাসেল), স্ত্রী ফুলসহ (কব) সম্পূর্ণ গাছের রঙ গাঢ় বেগুনী হয়। হেক্টরপ্রতি ফলন হয় ৫-৬ টন। রবি মৌসুমে ১১০-১১৫ দিনে এবং খরিপ মৌসুমে ৯০-৯৫ দিনে ভুট্টা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। চাষপদ্ধতি অন্যান্য ভুট্টার মতোই। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বেগুনী ভুট্টাও হয়ে উঠতে পারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান।

  •  
  •  
  •  
  •