নন-একাডেমিক ব্যক্তিকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রতিবাদ

aaa

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নন-একাডেমিক ব্যক্তিকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

শুক্রবার (৭ মে) প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ০৫ মে তারিখের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে জনাব মোহাম্মদ আবদুল মাননানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি অধ্যাপক নন, তিনি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব যিনি বর্তমানে পি আর এল ভোগরত অবস্থায় আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারনা, স্বায়ত্তশাসনের মর্মবাণী অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদগুলোতে শিক্ষকদের আসীন করাই প্রত্যাশিত ও স্বাভাবিক। কিন্তু বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে প্রশাসন ক্যাডারের পি আর এল ভোগরত একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়াতে আমরা বিস্মিত, মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক যেভাবে দেশকে উন্নয়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে অযাচিতভাবে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন নিয়োগ দিয়ে জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন তার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন ঠিক তখন একটি মহল তার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ ধরণের নিয়োগাদেশ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করবার অপচেষ্ঠায় লিপ্ত। আমরা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাকে (অতিরিক্ত সচিব) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের আদেশ প্রদানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এই নিয়োগাদেশ বাতিলপূর্বক প্রত্যাহার করবার জন্য সংশ্লিষ্ট কৃর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও সংগঠন তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করছেন। তাদের মতে বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান সৃষ্টির স্থান। একজন কোষাধ্যক্ষ ভাইস চ্যান্সেলরের সাথে সমন্বয় পূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সহ জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান সৃষ্টির নানাবিধ কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করেন। কাজেই একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদই এই পদের যোগ্য। এই পদে একজন সরকারি কর্মকর্তার নিয়োগদান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর আমলাতন্ত্রের নগ্ন হস্তক্ষেপ।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. নুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কোষাধ্যক্ষ হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল মাননান। যিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পিআরএল ভোগরত) ছিলেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও ‍বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের অনুমতিক্রমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৭ এর ধারা ১৩(১) অনুযায়ী পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পিআরএল ভোগরত) মোহাম্মদ আবদুল মাননানকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কোষাধ্যক্ষ পদের বেতন-ভাতা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3