চাকরি হারালেন প্রাক্তন উপাচার্যের ছেলে-মেয়েসহ ৬ স্বজ্ন

নিউজ ডেস্কঃ

নিয়োগ বাণিজ্য করে আলোচনায় আসা খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুর রহমান খানের ছেলেমেয়েসহ স্বজনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে উপাচার্যের মেয়ে শিক্ষক এবং অন্যরাকর্মকর্তাকর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এছাড়া ত্রুটি থাকায় ২৪ জন শিক্ষকের পদোন্নতি স্থগিত করা হয়েছে। বাতিলকরা হয়েছে এক শিক্ষকের পদোন্নতি। গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। 

তবে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পাওয়া প্রাক্তন উপাচার্যের ছাত্র আশিকুল আলমকে বড় ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে।সহকারী অধ্যাপকের পদ থেকে তাঁকে পদাবনতি দিয়ে প্রভাষক করা হয়েছে। অন্য ৪৬ জন শিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, আর্থিক লেনদেনসহ গুরুতর বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের আগস্ট ৭৩ জনশিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষকরা আবেদন করায় মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২৪ মার্চ পুনর্মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে। গত ২৩ আগস্ট কমিটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রনালয় থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

শহীদুর রহমান খানের মেয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ইশরাত খান, ছেলে সহকারী রেজিস্ট্রার শফিউর রহমান খান, শ্যালক শাখা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, তিন ভাতিজা কম্পিউটার অপারেটর মো. নিজাম উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান এবং ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. ইমরান হোসেনের নিয়োগ বাতিল হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্টিকেলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কমপক্ষে ১টি আর্টিকেল প্রথম লেখক হিসেবে ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে প্রকাশ না করা পর্যন্ত ২০ জন প্রভাষক জন সহকারী অধ্যাপকের পদোন্নতি স্থগিত থাকবে। প্রভাষকরা হলেনহর্টিকালচার বিভাগের মো. মোর্শেদুল ইসলাম আফসানা ইয়াসমিন, সয়েল সায়েন্স বিভাগের নুসরাত জাহান মুমু নাহিদ হোসেন, এগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি বিভাগের রাকিবুল হাসান মো. রাব্বি তুষার কান্তি রায়, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের রোমানা জাহান মুন, লাইভস্টক প্রোডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগেরমুস্তাসিম ফেমাস, অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন বিভাগের সাহাবুদ্দিন আহমেদ, সবুজকান্তি নাথ শাওলিন ফেরদৌস, একোয়াকালচার বিভাগের ফাতেমা জাহান, বাবলী আকতার মো. জাহিদ হোসেন, ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিকস বিভাগের রাবেয়াআক্তার, ফিশারিজ রিসোর্সেস কনজারভেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. আসাদুর রহমান, ফার্মস্ট্রাকচার বিভাগেরফাহমিদা আক্তার, ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি বিভাগের তানজিনা আক্তার তামান্না, এগ্রিকালচারাল ফাইন্যান্সকোঅপারেটিভ অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাহবুবা আখতার মিশু এবং এগ্রিকালচারাল ইকোনমিকস বিভাগের রোমানা বিশ্বাস।

সহকারী অধ্যাপকরা হলেনমাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের নাহিদ রহমান, ফিজিওলজি বিভাগের . এম হান্নান, অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন বিভাগের . মো. তসলিম হোসেন এবং ফার্ম স্ট্রাকচার বিভাগের মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। ছাড়া প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ফিশারিজ রিসোর্সেস কনজারভেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের . মো. মেহেদী আলমেরসহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের মোহাম্মদ আশিকুলআলমকে সহকারী অধ্যাপকের পরিবর্তে নিয়োগকাল থেকে প্রভাষক হিসেবে পদাবনতি করা হলো। উপাচার্যের মেয়ের চাইতে আশিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল গুরুতর। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা তাঁর ছিল না। পদও ছিল একটি। এতে একক ক্ষমতায় দুজনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তৎকালীন উপাচার্য।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3