পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় দিনাজপুর
সাবরিন জাহানঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তরবঙ্গ। এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর ভিড় জমান অসংখ্য পর্যটক। এর মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ এর কুলিক পক্ষীনিবাস পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি জায়গা। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ পরিযায়ী পক্ষীনিবাস এই কুলিক ফরেস্ট। তবে অন্যান্য স্থানেও পরিযায়ী পাখিদেরও দেখা মেলে প্রতি বছর। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পৌরসভার সাপনিকলা এমন একটি স্থান।
অনেক পাখি আছে যারা বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাস করে। এদেরকে পরিযায়ী পাখি বলে।
বিজ্ঞানের ভাষায়, নির্দিষ্ট প্রজাতির কিছু পাখি প্রতি বছর বা কয়েক বছর পরপর একটি নির্দিষ্ট সময় বা ঋতুতে অন্তত দুটো অঞ্চলের মধ্যে আসা-যাওয়া করে থাকে,এরাই ‘পরিযায়ী পাখি’। পৃথিবীর প্রায় ১০ হাজার প্রজাতির পাখির মধ্যে ১৮৫৫ প্রজাতিই (প্রায় ১৯%) পরিযায়ী।
চা বাগানে ঘেরা চারদিক আর তার মধ্যেই গভীর অরণ্য। প্রতি বছর কয়েকশো পাখি ভিড় করে আসে এখানে। জঙ্গলের মাঝের জলাশয়ের টানে ছুটে আসে পরিযায়ী পাখির দলও। সাপনিকলা অরণ্যের এই প্রাকৃতিক আকর্ষণের টানে কিছু পর্যটকও ছুটে যান প্রত্যেক বছর। কিন্তু নেই উপযুক্ত পরিকাঠামো।
বিগত কয়েক দশক ধরেই সাপনিকলা অরণ্যের উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দাবি জানিয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ। কয়েক বছর আগে অরণ্যের প্রবেশপথে গেট ও বিশ্রামাগার তৈরি হলেও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ তা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবশেষে সেই পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চলেছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসের অনুকরণে পাখিদের জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পরিযায়ী পাখির আবাসস্থলকে নিরাপদ রাখা ও বিচরণস্থল সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ( ৮ই মে) পালিত হয় ‘বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস’।
সাপনিকলা অরণ্যতেও যদি পক্ষীনিবাস গড়ে ওঠে, তাহলে সেখানেও পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকবে। এমনিতে অরণ্যে পাখির সংখ্যা সন্তুষ্টিজনক। শুধু তাদের নিরাপত্তার দিকটা আজও মজবুত নয়। শিকারীদের উৎপাত তো রয়েছেই। এতদিন এসবের বিরুদ্ধে বারবার আবেদন জানালে অবশেষে প্রশাসন এগিয়ে আসায় খুশি সকলেই। প্রকৃতি রক্ষার্থে সকলের সচেতনতা খুবই জরুরী।