বেরোবি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্ষার হল জীবন

সজীব হোসেইন, রংপুর:

নেই কোন বিনোদনের ব্যবস্থা, রিডিং রুম, জিমনেশিয়াম, উন্নত খাবার ব্যবস্থাপনা। তাতে কি হয়েছে? এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল জীবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল মানে হলো একেকটি বিরাট পরিবার, যেখানে সবাই সবার সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার অংশীদার। ব্যতিক্রম নয় উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আবাসিক হল গুলো। জানাচ্ছেন সজীব হোসেইন

বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সপ্তম বছরের শেষ দিকে চালু হয়েছে ছাত্রদের আবাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শহীদ মুক্তার এলাহী নামের দুটি হল। ২০১১ সাল থেকে চালু আছে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামের একটি ছাত্রী হল। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে হলের সংখ্যা দাঁড়াল তিনটিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাত হাজার এর মধ্যে
প্রায় এগারোশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন।

কেমন কাটছে হল জীবন: হল জীবনকে নিয়ে বিভিন্নজনের নানা অভিমত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্র হল চালু হওয়াতে সবার মাঝে অফুরন্ত আন্তরিকতা আর মায়ার বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। হলে থাকার অনুভুতি জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়েছি। স্নাতকোত্তরের ফলাফল বের হলেই ক্যা¤পাস ছাড়তে হবে কিন্তু শেষ সময়ে হলের আবাসিকতা ক্যা¤পাস জীবনকে সার্থক করেছে। হলের ডাইনিংয়ে সবার সাথে খাবার খাওয়ার যে আনন্দ হলে না উঠলে বুঝতে পারতাম না।’

শিক্ষার্থীরা আরো জানান, গণরুমের আড্ডা আর হৈ-হুল্লোড় কখনই ভুলতে পারব না। ভোগান্তি আছে তবে আড্ডা দিতে সবার পছন্দ গণরুমই। ক্যা¤পাস জীবনটা সত্যি খুবই আনন্দের। হলে না উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পূর্ণতাই পেত না।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খাবারে ভর্তুকি না থাকায় খাবারের মান খুবই খারাপ তাই ভর্তুকির দাবি আবাসিক শিক্ষার্থীদের। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ডাইনিংয়ের পাতলা ডালের ভয়াল চিত্রই আমাদের ক্যা¤পাসকে ভুলতে দিবে না। নিজে রান্নার ভয়েই পাতলা ডাল বেশ ভাল লাগে এখন। যদিও প্রাণে বেঁচে থাকার জন্য ডাইনিংয়ে খাওয়া হয়।

ছাত্র বা ছাত্রীকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখায়, যা জীবনে চলার পথে তাদের পাথেয় হয়ে থাকে। হল জীবন শিক্ষার্থীদের যেমন অনেক কিছু শেখায়, তেমনি এখানে দুর্ভোগেরও শেষ নেই। তবু হলে থাকতে হয় নির্বিঘেœ পড়ালেখার স্বার্থে। ছাত্র হল দুটিতে নেই এখনো বিনোদনের কোন ব্যবস্থা। নেই রিডিং রুম, জিমনেশিয়াম তবু যেন কোন আক্ষেপ নেই আবাসিক শিক্ষার্থীদের। সবাই ব্যস্ত দিন শেষে হলে ফিরে গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসছে, চলছে আড্ডা, গল্প, গান। এইতো হল জীবন।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: