মাংসাশী উদ্ভিদের তালিকায় যুক্ত হলো নতুন নাম!

সাবরিন জাহান
মাংসাশী উদ্ভিদ সম্বন্ধে বর্তমানে প্রায় সবারই কম বেশি ধারণা আছে। অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় এদের গঠনগত বৈশিষ্ট্য এবং খাদ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। ব্যতিক্রমধর্মী উদ্ভিদ গুলো সম্বন্ধে মানুষের আগ্রহও রয়েছে যথেষ্ট।
সম্প্রতি নতুন ধরনের আরেকটি মাংসাশী উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা,নিঃসৃত আঠালো তরলের মাধ্যমে পতঙ্গশিকার করে উদ্ভিদটি। উত্তর আমেরিকায় জন্মানো গাছটির নাম ‘ফলস অ্যাসফোডেল’, যা বর্ধিত করলো মাংসাশী উদ্ভিদের তালিকা।
তবে মজার ব্যপার হলো, উদ্ভিদটি ছিল বিজ্ঞানীদের পূর্ব পরিচিত। অর্থাৎ, ১০০ বছর আগেই উদ্ভিদটির আবিষ্কার হলেও অজানা ছিল তার পতঙ্গভুগী আচরণ। পরিচিত কলসপত্রী, সূর্যশিশির ইত্যাদি ‘মাংসাশী’ উদ্ভিদদের থেকে এর চারিত্রিক গঠন সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং খাদ্যগ্রহণের কৌশলেও রয়েছে ভিন্নতা।
সাধারণ গাছের সাথে গঠনমূলক সাদৃশ্য থাকলেও এর নেই পতঙ্গভুক উদ্ভিদদের মতো শিকারকে অবদ্ধ রাখার জন্য কোনো বিশেষ প্রকোষ্ঠ। বিশেষ এই ফলস অ্যাসফোডেল গাছের ফুলের বৃন্ত থেকে নিঃসৃত হয় এক ধরনের আঠালো তরল, যাতে আটকা পড়ে ছোটো ছোটো পতঙ্গ।
বছর খানেক আগে এই বিশেষ উদ্ভিদটি নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়েই অদ্ভুত তথ্য পান ব্রিটিশ কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কিউয়ান্সি লিন।
তিনি লক্ষ্য করেন, শিকারের পর উদ্ভিদটি সরাসরি তাদের উদরস্থ না করে বৃন্ত থেকে নিঃসৃত রাসায়নিকের মাধ্যমে দেহের বাইরেই শুরু করে পরিপাক প্রক্রিয়া। শিকারের দেহ থেকে নাইট্রোজেন ও অন্যান্য খাদ্য উপাদান বৃন্তের পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত রোমের মাধ্যমে শোষণ করে ফলস অ্যাসফোডেল।
মাংসাশী উদ্ভিদ সম্বন্ধে কাল্পনিক লিখনিও রয়েছে বেশ কিছু। তবে শুধু কল্পনা নয়, বাস্তবে দেখা যায় এমন উদ্ভিদ যারা জীবন্ত প্রাণী উদরস্থ করেই খিদে মেটায়। উত্তর আমেরিকাজুড়ে প্রায় শতাধিক পতঙ্গভুক উদ্ভিদে আছে। এতদিন পর্যন্ত মোট ১১ ধরনের পতঙ্গভুক উদ্ভিদের সাথে পরিচিত ছিলেন গবেষকরা। শুষ্ক অঞ্চলের মাটিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান এবং খনিজের অভাবেই উদ্ভিদের এমন অভিযোজন হয় বলে জানান তারা।
You must be logged in to post a comment.