রোহিঙ্গাদের এখনই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি : জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের এখনই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমার থেকেই আসতে হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে সহায়তা করা অব্যাহত রাখতে হবে।’

১৩ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এ সব কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেনেভা থেকে এই বক্তব্য দেন। খবর ইউএনবি।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও সহায়তার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার পরিকল্পনাও করতে হবে।’

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তাদের মিয়ানমার ছেড়ে চলে আসার পেছনে যে কারণ ছিল, তার কোনও সমাধান হয়নি।‘

বিগত কয়েক বছরে রোহিঙ্গাদের প্রতি যে অবিচারের শিকড় ছড়িয়েছে, তার সমাধানে এখনো কোনও পদক্ষেপ নেয়নি সে দেশের সরকার। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাবার অধিকার দিতে হবে এবং তার জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করার দিকে জোর দেওয়া উচিৎ বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার- দুই দেশকেই সহায়তায় এগিয়ে এসেছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার। ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আলোচনায়ও দুই দেশকে সহায়তার প্রস্তাব করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের এই কূটনীতিক বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানবাধিকার কর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শরণার্থীদের সাহায্যে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ ওই অস্থায়ী সমাধানগুলোই পরে স্থায়ী হয়ে যায়। আর সীমান্তের দুই দিকেই সহায়তার প্রয়োজন হবে।’

বাংলাদেশে ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশের প্রায় ছয় মাস হয়ে গেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের সর্বাত্মক সহায়তা করে হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানান গ্রান্ডি। তবে কম জায়গায় এত বেশী মানুষ বসবাসের কারণে রোগের প্রকোপ, বিশেষ করে ডিপথেরিয়া ছড়াচ্ছে এবং শরণার্থীরা ঝুঁকিতে আছেন।

মার্চে বর্ষাকাল শুরু হবে এবং এক লাখ শরণার্থী এমন জায়গায় দিন কাটাচ্ছেন যেখানে বন্যা বা ভূমিধসের আশংকা আছে। শরণার্থীদের ক্যাম্পগুলো আরও শক্তপোক্ত করতে হবে এবং নতুন জায়গায় ক্যাম্প সরিয়ে নিতে হবে বলে মত দেন তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  

Tags: