ডারউইনের বানর থেকে মানুষ সৃষ্টির বিবর্তনবাদ; সত্যতা কতটুকু?

মো: এনামুল হক মনি:
জাহাজে চাকুরীর সুবাদে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াবার একটা সুযোগ হয়েছিল মি. ডারউইনের। তিনি সখের বশে পুরান দিনের হাড় হাড্ডি আর কিছু মাথার খুলি সংগ্রহ করলেন। এই সংগ্রহের উপর নির্ভর করে বলে দিলেন বানর থেকে মানুষের আগমন। অর্থাৎ বানর মানুষের পূর্বসূরী।

পবিত্র কুরআন মজিদে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন যে, আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে সুন্দর অবয়ব দিয়ে তৈরি করে তাঁর মধ্যে রূহ মুবারক ফুঁকে দেন। সুতরাং যদি কোন মুসলমান বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করে তবে সে ঈমানহারা হয়ে কাফিরে পরিণত হবে। বিবর্তনবাদ কুরআন শরীফ এর দৃষ্টিকোণে মিথ্যা, এখন পশ্চিমা গবেষকরাও প্রমাণ করল বিবর্তনবাদ মিথ্যা।

বিবর্তনবাদ তত্ব বিজ্ঞানে সবসম​য়ই একটা তত্ব, সুত্র ন​য়। কারন এটি শুধুমাত্র অনুমাননির্ভর, প্রমানিত ন​য়। কারন এই তত্ব বিজ্ঞানের অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে ব্যর্থ​।

সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটি হচ্ছে জেনেটিক্স এবং ব্রিডিং। জেনেটিক্স এর সুত্রানুযায়ী প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ডিএন​এ কখনোই পরিবর্তিত হ​য়ে নতুন প্রজাতি হতে পারে না। এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমান নেই। নির্বাচন এবং প্রজননের মাধ্যমে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন সম্ভব কিন্তু নতুন প্রজাতি উদ্ভাবন সম্ভব ন​য়।

উদাহরন স্বরুপ কুকুরের নির্বাচন এবং প্রজননের মাধ্যমে সাদা কুকুর, কালো কুকুর, লাল কুকুর, ছোট কুকুর, ব​ড় কুকুর করা সম্ভব। কিন্তু কুকুর থেকে ভেড়া বানানো সম্ভব না। তেমনি লাল গরু, সাদা গরু, অধিক দুধের গরু, মাংস উত্পাদনের গরু সম্ভব। কিন্তু গরুকে হাতি বানানো সম্ভব না !!

একই ভাবে গাছের ক্ষেত্রেও যেমন ফজলি আম, ল্যাংড়া আম, আম্রপালি , গোপালভোগ আম করা সম্ভব কিন্তু আম থেকে কাঠাল হওয়া সম্ভব ন​য় !

Dar4ছাগল থেকে বিবর্তনবাদীদের ধাপে ধাপে বিবর্তিত হতে সমস্যা কোথায়? অর্থাৎ বিবর্তনবাদীদের নিকটতম পূর্ব-পুরুষ ছাগল হতে সমস্যা কোথায়? কিংবা ইঁদুর বা চামচিকা বা কলাগাছ হতে সমস্যা কোথায়? ইত্যাদি। ইত্যাদি। বিবর্তনবাদীরা এই যৌক্তিক প্রশ্নগুলোর জবাব দেয় কি-না, লক্ষ্য রাখবেন। এই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে গেলেই বিবর্তনবাদ যে একটি কল্পকাহিনী-ভিত্তিক তত্ত্ব ছাড়া বেশী কিছু নয় – সেটা তাদের মাধ্যমেই প্রমাণ হয়ে যাবে।

কুরআন শরীফ বিজ্ঞানময় তাই কুরআন শরীফ থেকে নেয়া বিজ্ঞানের সূত্র আজ পর্যন্ত কেউ ভুল প্রমাণ করতে পারেনি এবং পারবেও না। অথচ কুরআন শরীফ-এর তথ্য ও তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ইহুদী নাছারা ও বিধর্মীরা বহুবার মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয়েছে।

ডারউইনবাদেরও সেই অবস্থা। বিজ্ঞানীরা ভ্রুণ থেকে মানব শিশুর মাতৃগর্ভে বিবর্তন সম্পর্কে মাত্র ১০০ বৎসর পূর্বে মুসলিম বিজ্ঞানীদের সুবাদে জানতে পেরেছে। কিন্তু কুরআন শরীফে এ তথ্য ১৪০০ বৎসর পূর্বেই সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।

আশ্চর্যের বিষয়! কি করে যুক্তিবাদী মানুষ ডারউইনের যুক্তিহীন মতবাদ মেনে নিল অথচ কুরআন শরীফ-এর শাশ্বত বাণী বুঝতে চেষ্টা করল না। সত্য চিরদিন সত্যই থাকবে, মিথ্যা কোনদিন সত্যকে চাপা দিতে পারবে না।

__________________________________________
লেখক :
মো: এনামুল হক মনি
পিএইচডি গবেষক
কোরিয়া।

[প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। সবুজবাংলাদেশ24.কম লেখকের মতাদর্শ ও লেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত মতামতের সঙ্গে সবুজবাংলাদেশ24.কম-এর সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে।]

  •  
  •  
  •  
  •