বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন তিন প্রজাতির উদ্ভিদ আবিস্কার

মাসরুল আহসানঃ

বাংলাদেশে সপুষ্পক উদ্ভিদের নতুন তিন প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে কমেলিনেসি (Commelinaceae) পরিবারের নতুন এই তিন উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র জার্নাল অফ থ্রেটেনড ট্যাক্সা এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বোটানিক্যাল গার্ডেনে সংরক্ষিত উদ্ভিদ ও অন্যান্য জৈব সম্পদ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা ও জরিপ চালায়। এই জরিপে প্ল্যান্ট জেনেটিক রিসার্চের কাজে বোটানিক্যাল গার্ডেনে সংরক্ষিত ফ্রেশ স্যাম্পল ও ড্রাই স্যাম্পলগুলোর গবেষণা শুরু হয়। সেই গবেষণায় অধ্যাপক ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান, মোঃ খায়রুল আলম ও অধ্যাপক ড. এ.কে.এম গোলাম সারওয়ার এর গবেষক দল সপুষ্পক উদ্ভিদের নতুন কিছু প্রজাতির সন্ধান পান। কমেলিনেসি পরিবারের এই উদ্ভিদগুলো হচ্ছে Callisia fragnans (Lindl) Woodson, Murdannia gigantea (Vahl) G. Bruckn, Tradescantia sillamontana Matuda। প্রজাতি তিনটির বৈজ্ঞানিক নাম ওয়ার্ল্ড ফ্লোরা এবং প্লান্টস্ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ডেটাবেজে এ আপডেট করা হয়েছে।

কমেলিনেসি পরিবারের উদ্ভিদগুলো পৃথিবীর ক্রান্তীয় ও উপ ক্রান্তীয় এলাকাগুলো জুড়ে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। সারা পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত এই পরিবারের ৪১টি গণ ও ৭৩১টি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে । এই পরিবারের সদস্যরা Dayflower, Spiderwort ইত্যাদি নামে পরিচিত।

বাংলাদেশে কমেলিনেসি পরিবারের মোট ১৩টি গণ ও ২৮ প্রজাতির কথা পাওয়া যায়। তবে সর্বশেষ রিপোর্টে বলা আছে দেশে ১০টি গণ ও ২৭টি প্রজাতি বর্তমানে রয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলেই আছে ১০টি গণ ও ২৩টি প্রজাতি। তবে পূর্বের সকল রিপোর্ট বলছে নতুন শনাক্তকৃত তিন প্রজাতি ইতোপূর্বে দেশে আর কোথাও দেখা যায় নি। এই পরিবারের উদ্ভিদসমূহের কিছু আলাদা শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

আবিষ্কৃত তিনটি উদ্ভিদই বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। মূলত অন্দরগৃহের গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। তবে Callisia fragnans প্রজাতির কিছু মেডিকেল ব্যবহারও রয়েছে। পোড়াস্থানে ব্যবহারে দারুণ কার্যকরী। এছাড়াও পূর্ব ইউরোপে এই উদ্ভিদের পাতা চর্মরোগের বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

গবেষক দলের ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান  ও অধ্যাপক ড. এ.কে.এম গোলাম সারওয়ার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং  মোঃ খায়রুল আলম বাংলাদেশ ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট, চট্রগ্রাম এর গবেষক।

অধ্যাপক ড. এ.কে.এম গোলাম সারওয়ার বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশে উদ্ভিদ জগতে নতুন তিনটি প্রজাতি যুক্ত হলো। নতুন এই তিন প্রজাতির উদ্ভিদ সনাক্ত করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3