কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চাকুরি গেলো সুমনার
এ কিউ রাসেল, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
সুমনা পারভীন। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি। ২০১৫ সালের ২৮ শে নভেম্বর ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্যা রুরাল পুয়র (র্ডপ) নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর শাখায় ক্রেডিট অফিসার হিসেবে যোগ দেন।
তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার আলোকদিয়ার গ্রামে। মাস খানেক পরেই তাকে কালিহাতী উপজেলার জোকারচর এরিয়া অফিসে বদলি করা হয়। কিছুদিন না যেতেই এরিয়া ম্যানেজার আবদুস সালামের কুনজর পরে সুমনার ওপর। তাকে কুপ্রস্তাব দেয় সালাম। কিন্তু সুমনা তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। পুরুষ কর্মীদের আশপাশের এলাকায় কাজের সুযোগ করে দিলেও শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলামকে দিয়ে সুমনাকে দূরে দূর্গম
চরাঞ্চলে কাজের জন্য পাঠায়। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় নারী হিসেবে যা তার জন্য ছিল খুই কষ্টের। অনেক সময় কাজ শেষ করে পায়ে হেটে ফিরতে রাত হয়ে যেত তার। তারপরও চাকরির ক্ষতি হতে পারে এ ভয়ে তিনি উর্ধ্বতন কাউকে কিছু বলেননি।
এরিয়া ম্যানেজার সালাম প্রায়ই তাকে বলতো আমার কথায় রাজি হলে আশপাশের এলাকায় কাজের সুযোগসহ আরও অন্যান্য সুবিধা দেয়া হবে। সুমনা তাতেও রাজি না হওয়ায় সালামের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়তে থাকে। সুমনা বিষয়টি শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলামকে জানাতে গেলে সেও তাকে মৌখিকভাবে লাঞ্চিত করে। এর ফলশ্রুতিতে এরিয়া ম্যানেজার আবদুস সালাম ও শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম পরামর্শ করে গত ১০ই ফেব্রুয়ারি অর্থ হস্তমজুদ ও শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগ এনে সুমনার হাতে চাকরিচ্যুতির একটি চিঠি ধরিয়ে দেয়। এতে হতাশ হন সুমনা। পরে তিনি এর প্রতিকার চেয়ে সংস্থাটির চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। চাকরিচ্যুতির পক্ষকাল অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত জামানতের টাকা ফেরৎ পাননি সুমনা। উল্টো এরিয়া ম্যানেজার আবদুস সালাম ও শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।
সুমনা জানায়, একজন অসহায় নারী হিসেবে আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এরিয়া ম্যানেজার আবদুস সালাম ও শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম আমাকে অনৈতিক কাজ করতে বলেছিল। আমি কোন টাকা হস্তমজুদ ও সংস্থার শৃঙ্খলা নষ্ট করিনি। তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি হলে আজ আমাকে চাকরি হারাতে হতনা।
অভিযোগের বিষয়ে জোকারচর শাখার ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, সুমনা কিছু টাকা হস্তমজুদ করে রেখেছিল। পরে তা জমা দিয়ে দেয়। আর ওই টাকা হস্তমজুদ ও শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অন্য কোন কারণ নেই।
এরিয়া ম্যানেজার আবদুস সালাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মোটেও সত্য নয়। মূলত টাকা হস্তমজুদ ও শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.