সাদুল্যাপুরে কচুর বাম্পার ফলনে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

ব্যাঙ্গ করেও যে কথাটি বলা হয় তা হচ্ছে ‘কচু’। কারও কোন জিনিষ নিয়ে ফেরত না দিলে, সঠিক সময়ে কাজটি করতে মন না চাইলে, তখন আমরা ডান হাতের বুড়ো আঙগুল দেখিয়ে বলি ‘কচু’। তার মানেই ব্যাঙ্গ করে এ কথাটি বলা হয়। এমনি আরও অনেক কথা আছে যেখানে আমরা কচু শব্দটি উচ্চারণ করি। কচুর এত গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও কথায় কথায় কেন ‘কচু’ বলা হয়? কচুকে শুধু তাচ্ছিল্য করা হয় তাই নয়। কিন্তু সকলেই জানে কচুতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ আছে। কচু খেলে শরীরে রক্ত হয়।

আর সেই কচু দীর্ঘ বছর ধরে চাষ হয় গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে। বিশেষ করে এ উপজেলার সবজি খ্যাত এলাকার নাম ধাপেরহাট। আলু, পটল, করলা ও হলুদ সহ বিভিন্ন সাথী ফসলের পাশা-পাশি এবারে ধাপেরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে চাষ করা হয়েছে বইকচু। গত বছরের তুলনা এবার কচুর চাষাবাদ অনেকটাই বেড়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। বাজারে বেড়ে গেছে কচুর কদর। এর ফলে কচু আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন ধাপেরহাটের কৃষকেরা।

হাসানপাড়া গ্রামের কচু চাষী মোকছেদ আলী জানান, মৌসুমের শুরুতে কেজি প্রতি কচু ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। এরপরও অন্য ফসলের তুলনায় লাভ থাকছে তাঁদের। তাই কচু চাষীদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।

তাঁতীপাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী জানান, বিঘাপ্রতি সাত হাজার টাকা খরচ করে কচুর ফলন পাওয়া গেছে ৪০ থেকে ৬০ মণ। জমি থেকেই কচু নিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন পাইকারেরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও পাঠানো হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা যায় ধাপেরহাট বিএম কলেজের চত্বরের পাশে বসে নুর আলম, আনারুল, মরিয়ম ও রুপালী বেগম সহ অনেকেই কচু পরিচর্যা করছেন। কথা হয় তাদের সাথে। তারা বলেন এই এলাকা কচু আবাদে বিখ্যাত। আমরা কচু চাষীদের শ্রমিক হিসেবে কাজ করে দিনাতিপাত করি।

ছোট ছত্রগাছা গ্রামের মোন্নাফ মিয়া অভিযোগ করেন বলেন, কৃষি বিভাগের কোন কর্মকর্তা আমাদের কোন পরামর্শ দেন না। এমন কি তাদেরকে খবর দিলেও চোখে দেখা যায় না।

আলীপুর গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দিন জানান, আামাদের এলাকায় বিভিন্ন ধরণের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ কিংবা কোন সহায়তা পেলে আরও লাভবান হওয়া সম্ভব।

সাদুল্যাপুর উপজেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ফজলে এলাহী বলেন, কচুর দাম বাজারে তুলনামূলক ভালো থাকায় কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। কচুর আবাদ নিয়ে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •