মুরগীর ডিম ও মাংসের লাগামহীন দাম
নিউজ ডেস্কঃ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাধারণ মানুষ যখন ডিম-মুরগীর মাংসের দিকে ঝুঁকছেন, ঠিক তখনই একটি অসাধু চক্র সাধারণ মানুষের পকেট কাটতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাজারে ১ কেজি ব্রয়লার খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, সোনালী মুরগী ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা, লাল মুরগী ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল ডিমের দাম ডজন প্রতি-১৩৫ টাকা, সাদা ডিমের ডজন-১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের (বিপি কেআর জেপি) মূল্য তালিকায় ডিম ও মাংসের পাইকারি দাম ছিল; লাল ডিম ১০.০৫ টাকা, সাদা ডিম ৯.৫৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৫৪ টাকা কেজি, কালবার্ড লাল ২২০ টাকা কেজি, কালবার্ড সাদা ১৯০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগী ২৩০ টাকা কেজি।
পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সুমন হাওলাদার বলেন, এখন তো ভোক্তারা বয়লার মুরগী ২২০ টাকায় খাচ্ছেন। আগামীতে এ মুরগী ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়ও পাবেন না। যদি আমাদের খামারি ভাইদেরকে টিকিয়ে না রাখা যায়। কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর কাছে বৃহত্তরও পোল্ট্রি শিল্প জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটাই, ডিম-মুরগী ও টোটাল পোল্ট্রি বাজারকে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে।
তিনি বলেন, পোল্ট্রি খাত ধ্বংশের পেছনে দায়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। কারণ, খামারিদের যত সুযোগ সুবিধা বলেন এগুলো কিছুই তারা করছেন না। ফলে লোকসানে থাকা খামারিরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। কর্মকর্তারা জানেই না তার উপজেলায় কতগুলো পোল্ট্রি খামার আছে, কতগুলো বয়লার মুরগীর খামার আছে, কতগুলো লেয়ার মুরগীর খামার আছে। প্রান্তিক খামারিদের সাথে তাদের কোনো প্রকার যোগাযোগ নাই। একমাত্র কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর সাথে তাদের সংযোগ।
মুরগী ও ডিমের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির বিষয়ে খন্দকার সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগী ও ডিমের দাম বাড়ার কথা ছিলো আরো আগেই। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে খামারগুলোতে প্যারেন্ট স্টক বেশি হয়েছে, এছাড়া খামারিদের বাচ্চা বিক্রি হচ্ছিলনা। ফলে বাচ্চাগুলো মেরে ফেলতে হয়েছে। ফার্মাররা বাচ্চা নিচ্ছিলনা, কেননা তারা উৎপাদিত মুরগী বিক্রি করতে পারছিলোনা। এতে করে বাজারে মুরগীর সংকট দেখা দিয়েছে। সেই ঘাটতি এখন বাজারে এসে পড়েছে। তাই ভবিষ্যৎ এ মুরগী-ডিমের দাম আরো বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, খাবারের দাম বাড়ায় প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের ১ কেজি মাংস উৎপাদনে ২ কেজি খাবার প্রয়োজন হয়। ৭০ টকা দামে ২ কেজি খাবারের মূল্য ১৪০ টাকা হওয়ায় মাংস উৎপাদনে ১৫৩ থেকে ৫৬ টাকা খরচ পড়ে যায়, এছাড়া আনুষঙ্গিক আরো খরচ তো আছেই। তাই বাজার দর ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকার নিচে নামলে খামারি ও এ ব্যবাসায় জড়িতরা ঝড়তে থাকবেন। বর্তমানে মুরগীর বাচ্চার দাম বৃদ্ধি ও সারা দেশে সামাজিক অনুষ্ঠান বেশি হওয়াতে মুরগী ও ডিমের উপরেও অনেকটা প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি।