বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, এক বৈশ্বিক সমস্যা

হালিমা তুজ সাদিয়াঃ

গ্রীষ্মকাল আসার আগেই অত্যাধিক হারে বেড়ে যাচ্ছে তাপমাত্রা। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাপৃথিবীতে একই প্রভাব লক্ষ্যনীয়। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবনযাত্রায়, প্রকৃতিতে, জীব ও উদ্ভিদ জগতে। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি কেন বাড়ছে তাপমাত্রা? কি এমন বস্তু/অদৃশ্য সত্তা প্রভাব প্রভাব প্রকৃতিতে?

তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে সাধারণ আমরা উষ্ণয়ন নামে অভিহিত করি। আর বিশ্ব উষ্ণায়ন বলতে বুঝি বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রার ক্রমান্বয় বৃদ্ধিকে অর্থাৎ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াকে। বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) বর্তমান বিশ্বে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের অন্যতম।

একসময় আমাদের এই পৃথিবী উত্তপ্ত অবস্থায় ছিলো। প্রায় ১৮ কোটি বছর আগে যখন ইউরেশীয় প্লেট-ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সাথে সংঘর্ষ হয় তখন দেড় হাজার কিলোমিটার এরিয়াজুরে সৃষ্টি হয় অপূর্ব হিমালয়। এই সংঘর্ষের আগে পৃথিবী ছিলো উত্তপ্ত, একটা গ্রিন হাউজের মতো, বরফের অস্তিত্বই ছিলোনা তখন। আর হিমালয় যখন মাথা তুলে দাঁড়ালো পৃথিবীর তাপমাত্রা তখন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলো।

শুরু হলো সেই হিমযুগ। কারন বাতাসে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকে তা সূর্যের আলোকে আটকে রেখে পৃথিবীকে গরম রাখে। এই বিশাল পর্বতমালার সিলিকেট গুলো আবহাওয়া থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড কে শুষে নেয় যার ফলে পৃথিবী আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়। এই হিমালয়ই আমাদের গ্রহকে পালটে দিয়েছিলো চিরতরে। হিমালয়ের ফলেই শুরু হলো হিমযুগ। পরবর্তী সময়ে হিমযুগ-আন্তঃহিমযুগ-হিমযুগ এই চক্রের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে পৃথিবী।

প্লাইসটোসিন যুগের একটি হিমযুগ থেকে আর একটি হিমযুগীয় চক্রের মধ্যে দোলায়মানতার কারণ হলো সূর্যকে ঘিরে পৃথিবীর কক্ষপথের ভিন্নতা এবং পৃথিবীর তির্যক হয়ে আবর্তনের সঙ্গে সূর্যের সম্পর্কের বিষয়টি। হিমযুগ থেকে আন্তঃহিমযুগ অতিক্রম করে আরেকটি হিমযুগের সূত্রপাতের এই চক্রটির আবর্তন ঘটে প্রায় প্রতি ১ লক্ষ বৎসর পরে। হিমযুগে পৃথিবীর তাপমাত্রা পরবর্তী হিমযুগের অন্তর্বতী সময়ের তাপমাত্রার তুলনায় ৪° থেকে ৫°সে কম ছিল। সর্বশেষ হিমযুগটির সমাপ্তি ঘটে প্রায় ১০ হাজার বছর পূর্বে। গত ১০ হাজার বছর সময়ে বিশ্বের তাপমাত্রা ২°সে-এর অধিক উঠানামা করে নি।

আমরা তো জানি আমাদের এই পৃথিবী বায়ুমন্ডল দ্বারা আচ্ছাদিত যা আমাদেরকে সর্বদা প্রটেক্ট করছে। আমরা চিন্তাও করতে পারবোনা বায়ুমন্ডল ছাড়া কোনো প্রাণ। পৃথিবীর এই বায়ুমন্ডলের রাসায়নিক গঠনটি একশ বছর পূর্বে যেমন ছিলো আজ তেমনটি আর নেই। একশ বছর পূর্বের গড় তাপমাত্রার তুলনায় বর্তমান বিশ্বে গড় তাপমাত্রা প্রায় ০.৬০°সে বৃদ্ধি পেয়েছে, তখন পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা বর্তমানে প্রায় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পৃথিবীর তাপমাত্রার এই সামান্যতম পরিবর্তন হতে সময় লাগে কয়েক শত বছর আর এই পরিবর্তনের ফলেই জীব বৈচিত্র্য হুমকির দিকে অগ্রগর হয়। জলবায়ুগত পরিবর্তন সম্পর্কে এরকম ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, ২১ শতকের শেষের দিকের মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রায আরো ২.৫° থেকে ৫.৫°সে বৃদ্ধি পাবে। ফলশ্রুতিতে পৃথিবীপৃষ্ঠের পানির স্ফীতি ঘটবে, হিমবাহের বরফ গলে যাবে প্লাস সমুদ্রতীরবর্তী অনেক অঞ্চল পানির নীচে চলে যাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে যা জীব বৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

সাধারন অবস্থায় সূর্য থেকে পৃথিবীতে যে তাপ এসে পৌঁছায় তখন এর বেশিরভাগ অংশই বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে চলে যায়, ফলশ্রুতিতে, পৃথিবীর তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকে।তবে বায়ুমণ্ডলীয় কিছু গ্যাস রয়েছে যা সূর্যের তাপ শোষণ করে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলেছে এই গ্যাস গুলিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয়ে থাকে। এই গ্যাসগুলি যদি না থাকতো তাহলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি থেকে কমে -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেত, যা দরুন কখনোই কোনো প্রাণ টিকতে পারতো না। তবে সাম্প্রতিক বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ হিসেবে গ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহের উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধিকে দায়ী হিসেবে গন্য করা হয়।

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাবঃ

কার্বন ডাই অক্সাইডঃ প্রধান গ্রিন হাউস গ্যাস হল কার্বন ডাই অক্সাইড। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান খুবই কম মাত্র ০.০৩৬%। পরিমানে কম হলেও কার্বন ডাই অক্সাইড উষ্ণকরনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। শিল্প বিপ্লবের সময় ১৭৫০ সালে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান ছিল ২৮০ PPM কিন্তু তারপর থেকে জীবাশ্ম জ্বালানীর অতিরিক্ত দহনের ফলে এই কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পেতে আজ পরিমান হয়েছে ৩৮০ PPM। ১৯৯৫ সালে থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে প্রতি বছরের কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান বৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ১.৯ PPM।

মিথেনঃ অপর এক গুরুত্বপূর্ন গ্রিন হাউস গ্যাস হল মিথেন। মিথেন গ্যাসের প্রধান উৎস হল জলাভূমি, এছাড়া চাষের জমি, গবাদি পশুর মলমূত্র, উদ্ভিদ ও প্রানীর মৃত দেহ প্রভৃতি। এই মিথেন গ্যাসের উষ্ণকরন ক্ষমতা কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় প্রায় ২৩ গুন বেশি।

নাইট্রাস অক্সাইডঃ বায়ুমণ্ডলের নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের পরিমান খুব কম মাত্র ০.৩ PPM তবে প্রতিবছর এটি ০.২৫% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে পূর্বের তুলনায় ১৬% ।মূলত মনুষ্য কার্যকলাপ তথা কৃষি জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

ক্লোরোফ্লোরোকার্বন ও ওজোনঃ রেফ্রিজারেটার, এয়ার কন্ডিশনার, স্প্রে ক্যান থেকে নির্গত CFC গ্যাস বায়ুমণ্ডলে প্রায় ১০০ – ২০০ বছর স্থায়ী হয়। বর্তমানে CFC র পরিমান ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। বর্তামনে বায়ুমণ্ডলে CFC পরিমান কম হলেও অন্যান্য গ্রিন হাউস গ্যাসের তুলনায় CFC উষ্ণকরন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইডের সাপেক্ষে CFC গ্যাসের উষ্ণকরন ক্ষমতা প্রায় ৫০০০ থেকে ১০০০০ গুন বেশি।

ওজোন গ্যাসও উষ্ণকরনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উচ্চ অক্ষাংশীয় অঞ্চলে ওজোন CFC দ্বারা বিশ্লেষিত হয় বলে, সেখানে ওজোন গ্যাসের প্রভাব তেমন দেখা যায় না কিন্তু ক্রান্তীয় অঞ্চলে ওজোন বিশ্লেষণের পরিমান কম হওয়ায় ওজোন গ্রিন হাউস গ্যাস রূপে উষ্ণকরনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিমানের প্রপেলার থেকে নির্গত নাইট্রোজেনের অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের প্রধান উৎস।

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলাফলঃ

১. জলবায়ুর পরিবর্তনঃ বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীব্যাপী আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন শুরু হয়েছে। যার প্রভাব পৃথিবীর প্রতিটি দেশের উপর পড়ছে। ১৯৯৫ সালকে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে গননা করা হয়। সাইবেরিয়ার বেশির ভাগ অংশের তাপমাত্রা পূর্ববর্তী শতক গুলির তুলনায় ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৮৫০ সালের পর থেকে ইউরোপের আল্পস পর্বতের অর্ধেক বরফ গলে গিয়েছে। মেরু অঞ্চলে সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্টার্কটিকায় পেঙ্গুইনের সংখ্যা কমে গেছে এবং ক্রিল জাতীয় একপ্রকার সামুদ্রিক প্রানী যাদের বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রানীরা খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে তাদের পরিমানও কমে গেছে।

ক্রান্তীয় অঞ্চল গুলি আরো উষ্ণ ও শুষ্ক হচ্ছে। United Nation এবং World meteorological Organization ১৯৮৮ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের গতিপ্রকৃতি অনুসন্ধানের জন্য Inter-governmental Panel on Climate Change বা IPCC গঠন করেন। এই IPCC এর রিপোর্ট অনুসারে বলা হয়েছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ সেমি। তারা আরো অনুমান করেছেন যে আগামী ১০০ বছরে অর্থাৎ ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা আরো ১.৪ ডিগ্রি থেকে ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে পারে ২০ থেকে ৮৮ সেমি পর্যন্ত, ফলশ্রুতিতে মানবজীবন পড়বে এক ভয়ংকর পরিস্থিতিতে।

২.হিমবাহের গলনঃ মেরু অঞ্চলে যে হিমবাহের চুড়া গুলি হাজার হাজার বছর ধরে অক্ষত অবস্থায় ছিল আজ সেই বরফ গুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে অতি দ্রুত গলিত হয়ে যাচ্ছে।মেরু অঞ্চল গুলিতে শীতকালীন বরফ সঞ্চয়ের পরিমান অনেকটা হ্রাস পেয়েছে এবং যে পুরু বরফের স্তর গুলি সৃষ্টি হয়েছিল সেগুলি গ্রীষ্মের আগমনের সাথে সাথেই গলে যাচ্ছে। গলে যাচ্ছে হিন্দুকুশ হিমালয়ের পাহাড়, পর্বতের বরফ। সেখানকার বড় বড় হিমবাহগুলি (গ্লেসিয়ার) গলছে, গলছে এভারেস্ট, কারাকোরামের মতো পৃথিবীর দু’টি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গও। আন্টার্কটিকা ও আর্কটিকের (সুমেরু ও কুমেরু) পর হিন্দুকুশ হিমালয়কেই বলা হয় পৃথিবীর ‘তৃতীয় মেরু’।

হিমালয়ে সেটাই এত দ্রুত হারে হচ্ছে যে আর ৮০ বছরের মধ্যেই তার এক-তৃতীয়াংশ বরফ পুরোপুরি গলে যাবে। আর বিশ্ব উষ্ণায়নের তাপমাত্রার বাড়া-বৃদ্ধি যদি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখা যায়, তা হলেও অর্ধেক বরফই গলে যাবে হিন্দুকুশ পর্বতমালার। উষ্ণায়নের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই গলে যাবে দুই-তৃতীয়াংশ বরফ। আর ৪০ বছরেই ভেসে যাবে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেকংয়ের অববাহিকা তার ফলে, ওই অঞ্চলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেকং-সহ প্রধান যে ১০টি নদী রয়েছে, পুরোপুরি ভেসে যাবে তাদের অববাহিকাগুলি। তার ফলে, বিপন্ন হয়ে পড়বেন ভারত, পাকিস্তান, চিন, আফগানিস্তান, নেপাল, ভূটান-সহ. ৮টি দেশের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ। তার পর সেই হিমবাহগুলির বরফ শেষ হয়ে গিয়ে সেগুলি রুখুসুখু পাথর হয়ে যাবে। ফলে, সেই সব উৎস থেকে বেরিয়ে আসা নদীগুলি পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে।

৩.সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধিঃ বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য মেরু অঞ্চলে সঞ্চিত থাকা বরফ চূড়া গুলি অতি দ্রুত গলে যাচ্ছে, যার ফলে সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে মানুষজন এবং তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ভয়াবহতার সৃষ্টি হবে। সমুদ্র জল পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রাথমিক প্রভাব হল উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা, ভূমিক্ষয়, সমুদ্র তরঙ্গ ও ঘূর্নিঝর জনিত জলোচ্ছ্বাসের পরিমান বৃদ্ধি। যার ফলে উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র যেমন জলাভূমির সমুদ্র জলে নিমজ্জন, উপকূলীয় অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও বাসস্থানের অবলুপ্তি, ভৌমজলের মধ্যে সামুদ্রিক নোনা জলের প্রবেশ এবং কৃষিজাত জমির অভাব পরিলক্ষিত হয়।

আগামী এক শত বছরে সমুদ্র জলের উচ্চতা যে পরিমান বাড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে, সেই পরিমান উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে সমুদ্র মধ্যবর্তী দ্বীপ যেমন মালদ্বীপ, মার্শাল দ্বীপ যেগুলি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু সেগুলি সম্পূর্ন ভাবে সমুদ্রতলে নিমজ্জিত হয়ে যেতে পারে। দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়ার দেশ গুলির উপকূলবর্তী অঞ্চল গুলিতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে, সেই মানুষ গুলিও একটি বিরাট সমস্যার সম্মুখিন পর্যন্ত হতে পারে।

৪. বন্যার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধিঃ বিশ্ব উষ্ণায়ন জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটিয়ে জলবায়ু সম্পর্কীত দূর্যোগ, যেমন – ঝড়, বন্যা প্রভৃতির পরিমান বাড়িয়ে দেয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় পৃথিবীর প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ মানুষ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবিত অঞ্চলে বসবাস করে আর এই মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তির প্রধান কারণ সমুদ্র ও স্থলভাগের উষ্ণতার পার্থক্য। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য স্থলভাগ দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে স্থল ও জলভাগের উষ্ণতার তারতম্য সৃষ্টি করছে আবার এই উষ্ণায়নের জন্য মৌসুমি বায়ুর জলধারণ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এল নিনো ও সার্দান অসিলিয়েশন- একটি গুরুত্বপূর্ন ও রহস্যময় ঘটনা হল এল নিনো, যা প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্র স্রোত ও বায়ুপ্রবাহের দিক ও তীব্রতা পরিবর্তনের সাথে যুক্ত। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্র জলের গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে এল নিনো আবির্ভাবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিংশ শতকের প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ বছরের ব্যবধানে এল নিনোর আবির্ভাব হতো কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৩ থেকে ৫ বছরের ব্যবধানে এল নিনোর আগমন ঘটছে, শুধু তাই নয় এল নিনোর তীব্রতাও পূর্বের তুলনায় অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

৫. ঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধিঃ ক্রান্তীয় অঞ্চলে আবহাওয়া গত দূর্যোগ গুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান হল ঘূর্নিঝড়, যা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্গত বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। ক্রান্তীয় ঘূর্নবাত গুলি সমুদ্র ওপর সৃষ্টি হয়ে থাকে যখন সমুদ্র জলের উষ্ণতা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সমুদ্র জলের তাপমাত্রা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে এছাড়া বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রের জল বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পের জোগানও বৃদ্ধি পেয়েছে যা ঘূর্নিঝড়ের শক্তির প্রধান উৎস। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য এই ক্রান্তীয় ঘূর্নিঝড়ের সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে এই গতিবেগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন- ক্যারিবিয়ান সাগরে সৃষ্ট ঘূর্নিঝড় হ্যারিকেনের সংখ্যা পূর্ববর্তী বছর গুলির তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।

৬. মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবঃ বিশ্ব উষ্ণায়ন মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। প্রাথমিক ভাবে বলা যায় বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের দেশ গুলিতে তাপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলও উষ্ণ থেকে আরো উষ্ণতর হচ্ছে। গ্রীষ্মকালে এই তাপ প্রভাবের কারণে আজ সারা বিশ্ব ব্যাপী অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। উষ্ণায়নের কারণে জীবাণু ঘটিত রোগের পরিমাণও বাড়ছে। পতঙ্গ বাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এই বিশ্ব উষ্ণায়নের সাথেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত।

৭. জীববৈচিত্র্যের উপর প্রভাবঃ IPCC এর রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমান সময়ে যে সব জীব বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে আছে তার মূলেও রয়েছে এই বিশ্ব উষ্ণায়ন জনিত জলবায়ুর পরিবর্তন। যেমন- আফ্রিকার পার্বত্য গরিলা, আন্দিজের ভাল্লুক, বাংলার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও সুন্দরবনের জলাভূমি বিভিন্ন প্রজাতি, মেরু ভাল্লুক, পেঙ্গুইন প্রভৃতি জীব প্রজাতি। সমুদ্রের প্রবাল প্রাচীর যা জলের উষ্ণতার পরিবর্তনের সাথে অতি স্পর্শকাতর, তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ধ্বংসের মুখে অবস্থিত।

৮. কৃষি উৎপাদনের উপর প্রভাবঃ বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন কৃষিজ উৎপাদন কে প্রভাবিত করছে, বিশেষ করে ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্গত আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ার দেশ সমূহের উপর,যেখানে পূর্বে থেকে ফসলের উৎপাদন হয় খুব কম। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ফসল বলয় গুলি ক্রমশ উচ্চ অক্ষাংশীয় অঞ্চলের দিকে সরে যাচ্ছে । বিশেষ করে গম বলয় অঞ্চল গুলির উত্তরে সরণ।

৯. তাপ প্রবাহঃ আবহাওয়া জনিত দূর্যোগ গুলির মধ্যে অন্যতম হল তাপ প্রবাহ, যা পূর্বে উষ্ণ ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ গুলিতে গ্রীষ্মকালে মাঝে মধ্যে দেখা যেত কিন্তু আজকের সময়ে সেই তাপ প্রবাহের সংখ্যা ও স্থায়ীত্ব অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তাপ প্রবাহ আজ কেবল মাত্র ক্রান্তীয় অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নয় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের দেশ গুলিতেও গ্রীষ্মকালে এই তাপ প্রবাহ দেখা যাচ্ছে। তাপ প্রবাহের তীব্রতা বৃদ্ধির এক মাত্র কারণ হল বিশ্ব উষ্ণায়ন। যার ফলে প্রতি বছর অনেক মানুষ প্রান হারাচ্ছে।

১০. খরার প্রবনতা বৃদ্ধিঃ কোন অঞ্চলে কোন নির্দিষ্ট সময়ে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টিপাতের পরিমান কম হলে খরা হয়েছে বলে ধরা হয়। সাধারণত বৃষ্টিপাতের খামখেয়ালিপনার জন্য খরার সৃষ্টি হয়ে থাকে। বৃষ্টিপাতের অভাবে জলের বিভিন্ন উৎস গুলি শুকিয়ে যায়, সেই উৎস গুলি থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতি দেখা যায়, পুকুর, নদী এমনকি ভৌম জলের অভাব দেখা যায়। বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন হওয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমান ও বন্টনে তারতম্য দেখা যাচ্ছে, কোথাও অল্প সময়ে বিপুল বৃষ্টি হচ্ছে আবার কোথাও বৃষ্টিপাতের পরিমান পূর্বের তুলনায় অনেক কমে গেছে।

তাপমাত্রার এরুপ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণাঃ

বিগত ১০০ বৎসরে তাপমাত্রা ০.৫°সে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু পরবর্তী ৫০ বৎসরে, অর্থাৎ ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে তাপমাত্রা ১.৫°-২.০° সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হয়, আর এভাবে বৃদ্ধি পেলে পানিচক্রের তীব্রতার বৃদ্ধি ঘটে এবং বাষ্পীভবনের হার ১২% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী অধঃক্ষেপণ (বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, শিশিরপাত ইত্যাদি)-এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। আইপিসিসি উদ্ভাবিত জলবায়ু মডেল নির্দেশ করছে যে, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগেরও অধিক বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হবে। বাংলাদেশ প্রায়শই ধ্বংসাত্মক বন্যা কবলিত হয়। গত দুই দশকের মধ্যে ব্যাপক বন্যার ঘটনা ঘটে ১৯৮৭, ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালে। এসব বন্যায় দেশের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে এবং শস্যক্ষেত্রের ফসল বিনষ্ট হয়।পরবর্তীতে এই অবস্থা ভয়ংকরভাবে দাঁড়াতে পারে।

বিজ্ঞানীরা আরও আশঙ্কা করছেন যে, অত্যাধিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে যা ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতাও অনেক বৃদ্ধি পাবে। একটি উষ্ণতর জলবায়ু বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি করবে এবং তাতে দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তনের ফলে জোয়ারভাটা, বায়ুমন্ডলীয় চাপ, বাতাসের বেগের সৃষ্টি হয় যার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের অবিরাম পরিবর্তন ঘটে, তবে দীর্ঘমেয়াদে সমুদ্রপৃষ্ঠ পরিবর্তন একমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটে থাকে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ফলে তাপমাত্রার বৃদ্ধি পেয়ে মেরু ও পর্বতের বরফশীর্ষ এবং বরফের চাঁই গলে যাবে, বাংলাদেশের একটি বিশাল এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে জলমগ্ন হবে। দেশটির কত অংশ সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে তা নির্ভর করবে এর সঙ্গে সম্পর্কিত সমুদ্রপৃষ্ঠ পরিবর্তনের ওপর। একটি টাস্কফোর্স প্রতিবেদন এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেলে প্রায় ২২,৮৮৯ বর্গ কিমি ভূমি সমুদ্রে হারিয়ে যাবে, যা বাংলাদেশের মোট এলাকার প্রায় ১৫.৮%।

একটি নিম্নাঞ্চলীয় এবং উচ্চ জনসংখ্যা ঘনত্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জোয়ারভাটার তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় এলাকাসমূহে ভূমিক্ষয় এবং প্লাবনের মতো ঘটনা ঘটবে। সমুদ্রের লবনাক্ত পানি ভিতরে চলে আসবে যার ফলে কৃষিজমি এবং মিঠাপানির প্রাণী ও উদ্ভিদ ধ্বংস হয়ে যাবে। উপকূলীয় সীমানার আকৃতির পরিবর্তন ঘটবে। এতে বাংলাদেশের ভূভাগ সংকুচিত হয়ে যাবে।অতি তাপদাহের ফলে কিছু কিছু জায়গা মরুভূমির মতো অবস্থার অবস্থার সৃষ্টি হবে।

বায়ুমন্ডলে গ্রীনহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির কারণঃ

১৭৫০ সালের দিকে শিল্প বিপ্লবের পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বায়ুমন্ডলে ৪০% কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বৃদ্ধি হয়েছে। কার্বন ডাই অক্সাইডেরর এই বৃদ্ধির বেশীর ভাগই ঘটেছে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি, কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর ফলে। এছাড়াও বন ঊজার, ভূমি ব্যবহারে পরিবর্তন, ভূমিক্ষয় ও কৃষি ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক সম্পদের অবাদ ব্যবহার, জলাভূমি ডোবা-নালা, ময়লার ভাগাড় জৈব আবর্জনার স্তুপ, গৃহপালিত পশু, মল-মুত্র ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির কারণেও বায়ুমন্ডলে গ্রীণ হাউজ গ্যাসের বৃদ্ধি ঘটছে।

বর্তমানে গাছ-পালা কর্তন, নদী-খাল ভরাটের মতো কাজও অবাধে চলছে প্রবৃদ্ধি অর্জনের তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে। গভেষকদের ধারণা এই প্রতিযোগিতামূলক উন্নতি, অগ্রগতি, প্রবৃদ্ধি অর্জনের এই লড়াই থামানো সম্ভব না হলে এবং পরিবেশ-বান্ধব নীতি ও কর্মসূচি গৃহীত না হলে অচিরেই আমাদের এই পৃথিবী অসহনীয় অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হবে। তাই পরিবেশমুখী মনোভাব সবার মাঝে পোষণ করা অত্যন্ত জরুরী, পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন, বিকল্প জ্বালানী ব্যবহার, জীবাশ্ম জ্বালানীর যথাযথ ব্যবহার, কলকারখানা, যানবাহন, কৃষি জমির সুষ্ঠু ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি অন্যথায় তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত চরম পরিস্থিতির ফলে অস্থির ও উষ্ণতার এই পৃথিবীতে মানুষ, উদ্ভিদ ও জীবের বসবাস করাটাই কঠিন ও কষ্টকর হয়ে যাবে। কারণ, পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করলে এই জলবায়ুতে অভিযোজন সম্ভব হবে না। মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণসমূহ চরম প্রাকৃতিক বৈরিতার মুখে ধাবিত হবে এবং ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকবে।

তথ্যসূত্রঃ

2009 Ends Warmest Decade on Record. NASA Earth Observatory Image of the Day, 22 January 2010.

“Goddard Institute for Space Studies, GISS Surface Temperature Analysis”। NASA Goddard Institute for Space Studies। 2006-01-12। সংগ্রহের তারিখ 2007-01-17। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

“Real Climate, 2005 temperatures”। RealClimate। 2007-12-15। সংগ্রহের তারিখ 2007-01-17। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

“Climate Change 2001: Working Group I: The Scientific Basis, Chapter 12″। ১১ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭।

“Plate Tectonics -The Himalayas”. The Geological Society. Retrieved 13 September 2016.

ভারতবর্ষের মানুষের ইতিহাস- ইরফান হাবিব (বই)

Enhanced greenhouse effect — Glossary”। Nova। Australian Academy of Scihuman impact on the environment। ২০০৬।

“Enhanced Greenhouse Effect”। Ace.mmu.ac.uk। ২০১০-১০-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-১৫।

IPCC Fourth Assessment Report Synthesis Report: Summary for Policymakers (p. 5)
IPCC Fourth Assessment Report, Working Group I Report “The Physical Science Basis” Chapter 7

“বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইড – মাওনা লোয়া”। NOAA।

Intergovernmental Panel on Climate Change। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১০।

—————————————–
হালিমা তুজ সাদিয়া
শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

  •  
  •  
  •  
  •  
ad0.3

Tags: ,